গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত ২০০, সাহায্য পণ্য সরবরাহে বাধা

Looks like you've blocked notifications!
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযান। এএফপির ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বেসামরিক লোকজনকে রক্ষায় মিত্রদের আরও উদ্যোগ নেওয়ার মার্কিন চাপের মধ্যেই গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় ২০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নিয়ন্ত্রণাধীন কর্তৃপক্ষ গতকাল শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) এ তথ্য দিয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতি সংযম প্রদর্শনের আন্তর্জাতিক ডাকের পাশাপাশি আরও সাহায্যপণ্য যাতে গাজায় যুদ্ধপীড়িত ফিলিস্তিনিদের কাছে পৌঁছানো যায়, সেই আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে হামাসকে নির্মূলে ১১ সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা ‘অপারেশন সোর্ড অব আয়রনে’র তীব্রতা একটু হলেও কমিয়েছে দেশটি। এখন মূলত যুদ্ধ চলছে গাজা শহরে এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে। এ দুটি এলাকাই ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনগুলোর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।

গাজা শহরের নাসের হাসপাতালের মর্গের বাইরে গতকালও কান্নাভেজা চোখে প্রিয়জনের অন্তিম যাত্রায় প্রার্থনা করতে দেখা যায় অনেক ফিলিস্তিনিকে। হামাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুদ্ধে ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় অধিবাসী রাফাত আল আইদি বলেন, ‘এটি গণহত্যা, গণহত্যা চলছে এখানে।’

এদিকে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের পেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি আবারও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলাপ করেছেন। হোয়াইট হাউস জানায়, এই আলোচনায় ইসরায়েলের সামরিক তৎপরতা কমিয়ে আনতে এবং মানবিক সহায়তা পণ্যের সরবরাহের বিষয়সহ সাধারণ মানুষকে রক্ষার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান সত্ত্বেও সব লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কথা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিবে হামাসের হাতে বন্দি ১২৯ জন নাগরিকের আত্মীয়-স্বজনরা শনিবারও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। সশস্ত্র সংগঠন হামাস জানিয়েছে, তারা পাঁচজন ইসরায়েলি জিম্মিকে পাহারার দায়িত্বে থাকা দলটির সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছে। হামাস ধারণা কর,ছে তারা সবাই ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছে। হামাসের মুখপাত্র আবু ওবেইদা কোনো প্রমাণ ছাড়াই এ তথ্য জানান।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সাহায্য পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে ইসরায়েলকে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য অভিযুক্ত করেছেন। তবে শুধু সাহায্য পাঠালেই হবে না ফিলিস্তিনিদের দাবি, সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির। এ বিষয়ে মাহমুদ আল-শায়ের নামে এক ফিলিস্তিনি বলেন, ‘আমরা খাবার চাই না, আমরা যুদ্ধবিরতি চাই।’

আহমাদ আল-বুরাউই নামের আরেক অধিবাসী বলেন, ‘আমরা শুধু আমাদের ভিটেমাটিতে ফিরতে চাই। আমরা একটি সমাধান চাই।’

এদিকে গাজার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছে যুদ্ধ। ভারতের ভেরাভাল এলাকার উপকূলে একটি রাসায়নিক পণ্যবাহী ট্যাঙ্কারে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। কেউ এর দায় স্বীকার না করলেও ওয়াশিংটন বলছে, এই ওয়ানওয়ে ড্রোনটি ইরান থেকে ছোড়া হয়েছে। লোহিত সাগরে ইসরায়েলি পণ্যবাহী জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা প্রায়ই ড্রোন হামলা চালিয়ে থাকে। তবে, ইরান বরাবরই হুতিদের এই তৎপরতায় নিজেদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নাকচ করে আসছে।