হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে ‘অবসন্ন’ গাজাবাসী

Looks like you've blocked notifications!
গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলে জাওয়াইদিয়া এলাকায় ইসরায়েলি হামলার পর ধ্বংসস্তুপের কাছে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন ফিলিস্তিনি নাগরিক। ছবি : এএফপি 

গাজা উপত্যকায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ চলছেই। গত ১৩ সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা এই যুদ্ধ থামাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ডের শাসক গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের লক্ষণ দেখা না দেওয়ায় ফিলিস্তিনিরা বলছেন তারা এখন ক্লান্ত, অবসন্ন। খবর এএফপির।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার মধ্য দিয়ে যে যুদ্ধ শুরু হয় তার মূল বিস্তৃতি এখন গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে। ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতবিক্ষত শহরটির বিভিন্ন স্থান থেকে এখনো উঠছে ধোঁয়ার কুণ্ডলি। আরও দক্ষিণে মিসর সীমান্তে রাফাহ এলাকায় এখন তিল ধারনের জায়গা নেই। ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে আগে থেকেই জনাকীর্ণ এই এলাকাটিতে নতুন করে আসছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি।

খান ইউনিসে ভয়াবহ হামলার পর বাড়িঘর হারিয়ে রাফাহ এলাকায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া উম্মে লয়া আবু খাতের বলেন, ‘অনেক হয়েছে, এই যুদ্ধের কারণে আমরা পুরোপুরি অবসাদগ্রস্ত।’ ৪৯ বছর বয়সী এই নারী বলেন, ‘এই ঠান্ডা আবহাওয়ায় আমরা বাড়িঘর হারিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছুটে যাচ্ছি। দিনরাত আমাদের ওপর বোমা পড়ছে।’

তবে যুদ্ধ থামাতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও ইসরায়েলি বাহিনী তাদের সামরিক অভিযান বাড়িয়েই চলেছে। বিমান হামলার পাশাপাশি প্রচণ্ড সম্মুখ যুদ্ধের খবর দিচ্ছে তারা।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গতকাল শনিবারও (৩০ ডিসেম্বর) বলেছেন, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে নির্মূল না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে এবং এই যুদ্ধ চলবে আরও অনেক মাস।

এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক জটিল লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছে আর এ কারণে লক্ষ্য অর্জনে সময় প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘আমরা এই গ্যারান্টি দিতে চাই যে গাজা আর কখনো ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে থাকবে না।’

উল্লেখ্য গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে ব্যাপক হামলা চালায়। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী এই হামলায় তাদের এক হাজার ১৪০ জন নাগরিক নিহত হয়। হামাস হামলার পাশাপাশি ২৫০ জনকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে আসে। মাঝে কিছু বন্দি বিনিময় হলেও হামাসের হাতে এখনো ১২৯ জন পণবন্দি রয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।

অন্যদিকে, ওই হামলার পর থেকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ব্যাপক হামলা ও বোমাবর্ষণ শুরু করে গাজায়। গাজার হামাস পরিচালিত স্বাথ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী আকাশ, নৌ ও স্থলপথের অব্যাহত হামলায় এ পর্যন্ত ২১ হাজার ৬৭২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে যাদের বেশিরভাগই নিরীহ নারী ও শিশু। মন্ত্রণালয়টি আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ১৬৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, গাজার অভ্যন্তরে যুদ্ধে তাদের ১৭০ জন সেনাসদস্য নিহত হয়েছে।