জাপানে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৮

Looks like you've blocked notifications!
জাপানের ওয়াজিমা শহরে ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়িতে উদ্ধারকারী দল। ছবি : এএফপি

নতুন বছরের প্রথম দিনে জাপানে অনুভূত হওয়া শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৮ জনে পৌঁছেছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার বিকেলে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। গতকাল দেশটিতে এক দিনে ১৫৫টি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। খবর এএফপির।

আজ মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর হওয়া আফটার শকে বিধ্বস্ত গোটা জাপান। ভেঙে পড়েছে বাড়িঘর থেকে শুরু বহুতল ভবন। ফেটে গেছে রাস্তা। ভবনের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে বেগ পোহাতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। জীবিতদের উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে সাত দশমিক পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্পটি মূল ভূখণ্ডের হনশু দ্বীপের ইশিকাওয়া এলাকায় আঘাত করে। তবে জাপানের কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভূকম্পনের মাত্রা ছিল সাত দশমিক ছয়। আর এটি এর আগের ৯০টি ভূমিকম্পের চেয়ে জোড়ালো ছিল। ভূমিকম্পে সৃষ্ট সুনামিতে এক মিটারেরও বেশি উচ্চতার ঢেউ দেখা গেছে।

এএফপি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর নোটো উপদ্বীপে আগুন লাগে ও এতে কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাছ ধরার নৌকা ডুবে গেছে বা উপকূলে ভেসে গেছে। ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মহাসড়ক।

ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহর ওয়াজিমা। সোমবার চার ফুট উচ্চতার সুনামি সৃষ্টি হয় সেখানে। আশপাশের অনেক এলাকাতেও তৈরি হয় ছোট ছোট সুনামি। ওয়াজিমা শহরের বাসিন্দা আকিকো বলেন, ‘আমাদের বাড়িটি ভেঙে গেছে। তবে, আমরা সবাই বাড়ি থেকে বের হতে সক্ষম হয়েছি। ২০২৪ সাল যেভাবে শুরু হলো তা আমি সারাজীবন মনে রাখব।’

ভূমিকম্পের পর দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বৈঠকে বসেন দেশটির প্রদানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। বৈঠকের পর তিনি অসংখ্য হতাহতের ঘটনা, ভবন ধস এবং দাবানলসহ বিরাট ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের  সন্ধান ও উদ্ধারের জন্য আমাদের সময়ের বিরুদ্ধে দৌড়াতে হবে।’ সাংবাদিকদের কিশিদা বলেন, ‘এখন বেশ শীত পড়েছে। এজন্য আমি জরুরি সহায়তা পণ্য হিসেবে পানি, খাবার, কম্বল, গা গরম রাখার তেল, জ্বালানি, পেট্রোল সরবরাহের নির্দেশনা দিয়েছি।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, ইশিকাওয়ায় বাড়িঘর ও গাড়িগুলো ভীষণভাবে কাঁপছে। দোকানপাট ও ট্রেনে আতঙ্কিত লোকজন ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে পড়েছে। বাড়িঘর ভেঙে পড়ছে আর রাস্তাগুলোতে তৈরি হয়েছে বড় বড় ফাটল।