ইউক্রেনের যুদ্ধবন্দি নিয়ে রাশিয়ার সামরিক উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, বেঁচে নেই কেউ

Looks like you've blocked notifications!
রাশিয়ার বেলগোরোদ এলাকার ইয়াবলোনোভো গ্রামের কাছে একটি রাস্তা। এই এলাকাটির কাছেই যুদ্ধবন্দিদের নিয়ে রুশ আইএল-৭৬ সামরিক পরিবহণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। ছবি : এএফপি

ইউক্রেনের ৬৫ জন যুদ্ধবন্দিসহ রাশিয়ার একটি সামরিক উড়োজাহাজ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস করে দিয়েছে ইউক্রেন, এ অভিযোগ করেছে রাশিয়া। উড়োজাহাজটি বন্দি বিনিময়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল বলে জানিয়েছে মস্কো। তবে বিধ্বস্ত হওয়ার পর উড়োজাহাজটির যাত্রী, কর্মকর্তা ও ক্রুদের মধ্যে কেউ বেঁচে নেই বলে জানা গেছে। খবর এএফপির।

কিয়েভ শুরতে নির্ধারিত বন্দি বিনিময়ের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও বেশ কয়েক ঘণ্টা পর জানায়, তাদের কাছে উড়োজাহাজটির যাত্রীদের বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য কোনো তথ্য নেই। তবে গতকাল বুধবার (২৪ জানুয়ারি) উড়োজাহাজটি বিধ্বস্তের বিষয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বিশাল উড়োজাহাজ রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের বেলগোরোদ এলাকায় আকাশ থেকে নিচে নেমে আসে এবং মাটি পড়ে বিধ্বস্ত হয়ে বিশাল আগুনের কুণ্ডলী তৈরি হয়।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইএল-৭৬ মডেলের উড়োজাহাজটিতে ৬৫ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দির পাশাপাশি ছয়জন ক্রু ও তিনজন এসকর্ট কর্মকর্তা ছিলেন। মোট ৭৪ জন আরোহীর কেউ বেঁচে নেই।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, খারকিভ সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করা ইউক্রেনীয় সৈন্যরা পরিবহণ উড়োজাহাজটি লক্ষ্য করে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে। এ ধরনের হামলাকে সন্ত্রাসী কাজ হিসেবে বর্ণনা করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ।

ইউক্রেনের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, এই মুহূর্তে তাদের কাছে উড়োজাহজটিতে কারা ছিলেন এবং কতজন আরোহী ছিলেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নেই।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যাকালীন ভাষণে জেলেনস্কি অবশ্য মস্কোর অভিযোগের বিষয়ে নিশ্চিত বা অস্বীকার কোনোটিই করেননি। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনীয় বন্দিদের জীবন, তাদের পরিবারের অনুভূতি ও সামজের আবেগ নিয়ে খেলছে। তিনি তার বক্তব্যে আরও বলেন, ‘উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে রাশিয়ার ভূখণ্ডে, আমাদের আওতার সম্পূর্ণ বাইরে।’

এদিকে, জেলেনস্কির আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বানের পরপর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় রাশিয়ার অভিযোগের বিষয়ে আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরিকল্পিত যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের জন নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়।

অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির গণমাধ্যমগুলো জানায়, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বিমানটিতে হামলা চালিয়েছে। পরে অবশ্য এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।

রাশিয়ার সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম আরটি উড়োজাহাজটির যাত্রী হিসেবে যুদ্ধের সময় আটক করা ওই ইউক্রেনীয় সৈন্যদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।

যুদ্ধবন্দি বিনিময় দেশ দুটির জন্য একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এরপরেও রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই বছর আগে শুরু হওয়া যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৪৯ দফায় বন্দি বিনিময় করেছে। রাশিয়ার হাতে এখনও প্রায় আট হাজার ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দি রয়েছে।