ভাঙনের মুখে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি সাহায্য সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ

Looks like you've blocked notifications!
গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরে বাড়িঘরের ধ্বংসস্তূপ দেখছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি : এএফপি

গাজায় যুদ্ধের সঙ্গে সংগ্রাম করতে থাকা জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি সাহায্য সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তাদের কার্যক্রম জটিল সন্ধিক্ষণের মুখোমুখি। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এ কথা জানায় সংস্থাটি। 

মানবিক সাহায্যপণ্যের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যাওয়ার সময়টিতে ইসরায়েলের চাপের মুখে এবং দাতারা তহবিল বন্ধ করে দেওয়ার প্রসঙ্গগুলো উল্লেখ করে সংস্থাটির প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমাকে বলতে হচ্ছে, ইউএনআরডব্লিউএ ভাঙনের মুখে পৌঁছে গেছে।’

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া এক চিঠিতে লাজারিনি বলেন, ‘সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবনা ৩০২ এর আলোকে সংস্থার সামর্থ্য পূরণের জন্য যে ম্যান্ডেট দেওয়া হয়েছিল, তা এখন গুরুতর হুমকির মুখে।’ রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের আবির্ভাবের পরপর ১৯৪৯ সালে এই প্রস্তাবনার আলোকেই সংস্থাটি গঠন করা হয়েছিল। অধিকৃত ভূখণ্ডসহ লেবানন, জর্ডান ও সিরিয়ায় ইউএনআরডব্লিউএর প্রায় ৩০ হাজার কর্মী নিয়োজিত রয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার সঙ্গে ফিলিস্তিনি সাহায্য সংস্থাটির বেশ কিছু সদস্য জড়িত ছিল, ইসরায়েলে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও জাপানসহ বেশ কিছু দেশ ইউএনআরডব্লিউএর জন্য তহবিল প্রদান বন্ধ করে দেয়।

গত সপ্তাহের শেষে এক সাক্ষাৎকারে লাজারিনি বলেন, ইতোমধ্যে ৪৩৮ মিলিয়ন ডলারের তহবিল ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে, যা কি না ২০২৪ সালের প্রত্যাশিত মোট তহবিলের অর্ধেকেরও বেশি। জাতিসংঘ ইসরায়েলের অভিযুক্ত কর্মীদের চাকরিচ্যুত করে। এ ছাড়া এ বিষয়ে সংস্থাটির অভ্যন্তরীণ তদন্তও চলছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে ইউএনআরডব্লিউএ নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে কি না তা মূল্যায়নে একটি স্বাধীন প্যানেলকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

গতকাল লাজারিনি বলেন, ওই ১২ জন সাবেক কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কোনো প্রমাণ দেয়নি ইসরায়েল, কিন্তু তারপরেও ১৬টি দেশ তহবিল প্রদান বন্ধ রেখেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা দাতা ও আয়োজক দেশগুলোকে জানিয়েছি, নতুন তহবিল ছাড়া এই অঞ্চলে ইউএনআরডব্লিওিএর কাজ চালাতে মার্চ মাস থেকে ভীষণ বেগ পেতে হবে।’

লাজারিনি আরও বলেন, ‘আমি আশঙ্কা করছি, আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি স্মারক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি আমরা।’

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস অতর্কিত হামলা চালিয়ে এক হাজার ১৬০ জনকে হত্যা করে। এ ছাড়া হামাসের যোদ্ধারা ২৫০ জন বিদেশি ও ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। এদের মধ্যে ১৩০ জন এখনও জিম্মি রয়েছে বলে দাবি করছে ইসরায়েল।

এই হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজা উপত্যকায় নির্বিচার বোমাবর্ষণ ও স্থল অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। হামলায় এখন পর্যন্ত ২৯ হাজার ৪১০ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। এদের বেশির ভাগই নিরীহ শিশু ও নারী। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।