গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে অগ্রগতি কতদূর?

Looks like you've blocked notifications!
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরের একটি আশ্রয় শিবিরে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি : এএফপি

গত সপ্তাহে প্যারিসে যখন যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা গাজার সংঘাত থামাতে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে বৈঠক শুরু করে তখন থেকেই সরব হয়ে ওঠে ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো। তবে এই প্রস্তাবনার বিষয়ে কোনো ধরনের নথি প্রকাশ করা হয়নি। এর মাঝেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন বললেন, আগামী সোমবারের মধ্যে একটি চুক্তির বিষয়ে তিনি আশাবাদী, তখন চুক্তি ঘিরে অনুমান-জল্পনা বাড়তেই থাকে। তাই সবার মনেই প্রশ্ন জাগে, এই চুক্তি কেমন হতে যাচ্ছে?

ধারণা করা হচ্ছে, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ হতে পারে ছয় সপ্তাহের। এই সময়ে একে একে ৪০ জন ইসরায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে বেসামরিক নারী নাগরিক ও সেনা সদস্যদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগার থেকে ৪০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্ত করা হবে, যাদের অনেকেই গুরুতর সন্ত্রাসী কাজের দায়ে অভিযুক্ত। পাশাপাশি গাজার সবচেয়ে জনবহুল এলাকা থেকে সরে আসতে পারে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এর ফলে প্রায় ১৮ লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি গাজার উত্তরে তাদের আবাসস্থলে ফিরতে পারে।

এ সপ্তাহেও যখন ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দর-কষাকষিতে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসরের প্রতিনিধিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন, তখন একটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায় যে বেশির ভাগ ইস্যু এখনও ঝুলে আছে।

জানা গেছে, একজন ইসরায়েলি পণবন্দির মুক্তির বিনিময়ে কয়জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্ত করা হবে, তা নিয়ে চলছে প্রচণ্ড দর-কষাকষি। তবে এখনো ইসরায়েলি সৈন্যদের সরিয়ে নেওয়া ও ফিলিস্তিনিদের ফিরে আসার ব্যাপারে কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো যায়নি।

তবে এর আগের সমঝোতার আলোচনার অভিজ্ঞতা থেকে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একজন বিভাগীয় প্রধান হেইম টোমার জানান, তিনি চুক্তির বিষয়ে আশাবাদী। টোমার বলেন, ‘আমি মনে করি, সমঝোতায় পৌঁছাতে খুব কাছাকাছি আসা গেছে। আমি এটা বলছি না, ইসরায়েলি পণবন্দিদের বা ফিলিস্তিনি নাগরিকদের মুক্ত করা হবে, তবে মনে করছি আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে টোমার কাতারভিত্তিক হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহ’র সাম্প্রতিক বক্তব্য তুলে ধরেন, যেখানে চুক্তিতে পৌঁছাতে হামাস তাদের শক্ত অবস্থান থেকে সরে আসছে বলে মনে করা হয়। এক টেলিভিশন ভাষণে ইসমাইল হানিয়েহ বলেন, ‘আমরা যদি আলোচনায় কোনো নমনীয়তা দেখাই, তবে তা ফিলিস্তিনি জনগণের জীবন রক্ষার জন্যই করা হবে। যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে মানুষের বেদনার সমাপ্তি ও আত্মোৎসর্গের প্রতি সম্মান জানাতে তা করা হবে।’

ইসমাইল হানিয়েহ আরও বলেন, প্রয়োজনে হামাস লড়াই চালিয়ে যাবার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তিনি ফিলিস্তিনিদের প্রতি আহ্বান জানান যেন তারা পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে ইসরায়েলি বাধা ডিঙিয়ে মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসে আল-আকসা মসজিদের দিকে পদযাত্রা করে।