মুসলিমদের বাদ দিয়ে নাগরিকত্ব আইন বাস্তবায়ন নিয়ে ভারতে বিক্ষোভ

Looks like you've blocked notifications!
ভারতীয় ছাত্র ফেডারেশনের সদস্যরা আজ মঙ্গলবার চেন্নাইতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। ছবি : এএফপি

ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বলছে, মুসলিম না হলে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মানুষ ভারতীয় নাগরিকত্ব চাইতে পারবে। মুসলিমদের বাদ দিয়ে বিতর্কিত এই নাগরিকত্ব আইন কার্যকরের সরকারি ঘোষণার পর দেশটিতে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। খবর আরব নিউজের।

ভারতের পার্লামেন্টে ২০১৯ সালে এই বিল পাস হয়। কিন্তু, কার্যবিধি কী হবে তা না জানা পর্যন্ত এটি কার্যকর হচ্ছিল না। সে বছর প্রচণ্ড বিক্ষোভের মুখে এই প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়। এ সময় শতাধিক মানুষের প্রাণ যায় বলে অভিযোগ ছিল।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত সোমবার (১১ মার্চ) বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘আরেকটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন’। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ‘হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের প্রতি আমাদের সংবিধান প্রণেতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি উপলব্ধি করেছেন।’

সিএএ বাস্তবায়নের ঘোষণার পর গতকাল রাতেই আসামের গুয়াহাটিতে আইনের নির্দেশিকার অনুলিপি পোড়ানোসহ বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদ হয়।

এক ছবিতে এএফপির বলছে, ভারতীয় ছাত্র ফেডারেশনের সদস্যরা আজ মঙ্গলবার চেন্নাইতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। আরও কিছু স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।

ইউনিয়নের মহাসচিব সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য আরব নিউজকে বলেছেন, ‘এএএসইউ ছাড়া আরও ৩০টি জাতিগত সংগঠন এই আইন বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে।’

এর আগে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মুসলিম অধিকার সংগঠনগুলো বলছে, প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) সম্বলিত আইনটির মাধ্যমে ভারতের ২০ কোটি মুসলমানের সঙ্গে বৈষম্য করা হতে পারে। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যা ভারতে। তাদের আশঙ্কা, সরকার কিছু সীমান্তবর্তী রাজ্যে কোনোরকমের কাগজপত্র ছাড়াই মুসলমানদের নাগরিকত্ব বাতিল করে দিতে পারে।

আইনটি ‘মুসলিমবিরোধী’ বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা অস্বীকার করেছে বিজেপি সরকার। আইনটির সমর্থনে তারা বলেছে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে নিপীড়নের সম্মুখীন সংখ্যালঘুদের সাহায্য করার জন্য এটি প্রয়োজন রয়েছে।

মোদি সরকার আরও বলেছে, আইনটি নাগরিকত্ব প্রদানের উদ্দেশে করা হয়েছে। এটি কারও কাছ থেকে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়। আইনটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছে তারা।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো অবশ্য অভিযোগ করেছে, ২০১৪ সালে দেশটিতে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মুসলমানদের ওপর নিপীড়ন বেড়েছে।