দ. আফ্রিকায় নির্বাচন আজ, অগ্নিপরীক্ষায় ক্ষমতাসীন এএনসি
অনন্য সাধারণ নির্বাচনের অংশ হিসেবে আজ বুধবার (২৯ মে) ভোট দিচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ভোটাররা। দেশটিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার তিন যুগ পার হওয়ার পর ক্ষমতাসীন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এএনসি) জন্য এই নির্বাচন একটি অগ্নিপরীক্ষা হিসেবে দেখা দিয়েছে। খবর এএফপির।
দক্ষিণ আফ্রিকা বর্ণবাদী শাসন ব্যবস্থা হতে সরে আসার পর থেকে ক্ষমতায় থাকা এএনসির জন্য একটি অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি হয়েছে নির্বাচনকে ঘিরে। এএনসিকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে ডান ও বামপন্থী দুই ধারাই। আর এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দুই কোটি ৭০ লাখ ভোটার আজ তাদের ভোট প্রয়োগ করছেন।
এক সময়ের কালোদের স্বাধীনতা আন্দোলনের কেন্দ্রভূমি হিসেবে পরিচিত সোয়েতো শহরে আজ খুব ভোরে এএনসির বয়স্ক ভোটারদের একটি ভোটকেন্দ্রে জড়ো হতে দেখা যায়। যদিও ভোটকেন্দ্রটি ১৫ মিনিট পরে খুলেছিল।
ভোটকেন্দ্রের বাইরে লাইনের সামনের দিকে থাকা ৭৬ বছর বয়সী এগনেস নগোবেনি বলেন, ‘আমি বেশ উত্তেজনা বোধ করছি। এ কারণেই আজ আমি এত সকালে এখানে। যে দলকে আমি ভালোবাসি তাকে ভোট দেওয়ার জন্য আমি এসেছি। এই দলের কারণেই আজ আমি এখানে।’
কাকে সমর্থন করছেন, জানতে চাইলে নগোবেনি বলেন, ‘এটা খুব পুরোনো দল যারা দীর্ঘদিন থেকে আমাদের সঙ্গে আছে। আমি নতুন লোকদের পছন্দ করি না।’
এ সময় তার পাশে থাকা ৪১ বছর বয়সী ডানভেরিস মাবাসা অবশ্য দ্বিমত পোষণ করেন। হাঁটু ছোঁয়া কোট ও বাদামি টুপি মাথার এই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি পরিবর্তন চাই। অনেকদিন হয়েছে। আর এজন্য আমি আমার ভোটটা দিতে পারি আর অপেক্ষা করতে পারি। আমাদের চাকরি নেই, পানি নেই, কোনো কিছুই কাজ করছে না।’
আজ বুধবারের ভোটে ভোটাররা জাতীয় পরিষদের ৪০০ জন সদস্যকে নির্বাচিত করবেন। আর এই পার্লামেন্ট সদস্যরাই সামনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে একজনকে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন।
এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার ৯টি প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদেরও নির্বাচন করবেন ভোটাররা।
ধারণা করা হচ্ছে, ১৯৯৪ সালে দেশটিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ক্ষমতায় থাকা এএনসিকে এবার প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় থাকতে কোয়ালিশন সরকার গঠনে আলোচনায় বসতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার হাত ধরে ক্ষমতায় আসা এএনসি দেশের কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল। তার নেতৃত্বে লাখ লাখ নাগরিক দারিদ্র্যের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসে।