প্রধান উপদেষ্টার কাছে বিদ্যুতের পাওনা চেয়ে আদানির চিঠি
ভারতের শিল্পপতি গৌতম আদানি বিদ্যুৎ দেওয়া বাবদ পাওনা টাকা পরিশোধে হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চিঠি লিখেছেন—এমনটি বলছে ভারতীয় বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, এবিপি লাইভ, বিজনেস ওয়ার্ল্ড, হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য ইকোনোমিক টাইমস বলছে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছে বকেয়া ৮০ কোটি মার্কিন ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৯ হাজার ৫৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ১১৯.৫৪ টাকা ধরে)। এই বকেয়া দ্রুত পরিশোধ করে নির্বিঘ্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পেতে অনুরোধ করেছেন তিনি।
বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড তাদের প্রতিবেদনে বলছে, তাদের সূত্র জানিয়েছে, গত ২৭ আগস্ট এই চিঠি লেখা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে প্রাথমিকভাবে বকেয়া থাকা ৮০ কোটি মার্কিন ডলার পরিশোধে হস্তক্ষেপের জন্য’ অনুরোধ করা হয়।
দ্য ইকোনমিক টাইমস লিখেছে, গৌতম আদানি চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমাদের ওপর ঋণদাতাদের প্রচণ্ড চাপ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করে যাচ্ছি। এ অবস্থায় পিডিবির কাছে আমাদের যে ৮০ কোটি ডলার পাওনা হয়েছে, সেটি দ্রুত মিটিয়ে দিতে আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
সূত্র অনুসারে আগস্টের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ঋণদাতারা এখন আমাদের ওপর কঠোর হয়েছে, কারণ আমরা বাংলাদেশের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি বজায় রেখেছি। সরবরাহের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি বজায় রেখে আমরা কি নিয়মিত বিল পরিশোধের অনুরোধ করতে পারি? উপরন্তু, প্রতি মাসে উল্লেখযোগ্য ধাপে বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা উচিত।’
আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট তাপ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। কোম্পানিটি ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এই বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে। এ সময় আদানি এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট গোড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্টের পূর্ণ লোড উপলক্ষে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
চলতি বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালালে আদানির পাওনা আলোচনায় আসে।
বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড আরও বলছে, আদানি পাওয়ার গোড্ডা পাওয়ার ইউনিট স্থাপনে দুই বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে বলে জানা গেছে। সূত্র আরও জানায়, চেয়ারম্যান তার চিঠিতে বাংলাদেশের সঙ্গে গ্রুপের দীর্ঘস্থায়ী ও গভীর সম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন। তিনি দেশের অন্যান্য ব্যবসায়িক স্বার্থ, যেমন—বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেড (বিইওএল)। একইভাবে গ্রুপটি তার উল্লেখযোগ্য ক্ষমতার মাধ্যমে রূপসী, নারায়ণগঞ্জ ও মংলায় তেল শোধনাগার পরিচালনা করে।
সূত্র জানায়, চিঠিতে অবকাঠামো নির্মাণে দক্ষতা অর্জনের সুযোগ অন্বেষণে গ্রুপের আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছাড়া, বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও অবকাঠামো উন্নয়নে গ্রুপের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন গ্রুপের চেয়ারম্যান।