রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি ইউক্রেনকে
ইউক্রেন এবার মার্কিন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে আক্রমণের অনুমতি পেয়েছে। আজ সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়। ইউক্রেনের হাতে এই দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তুলে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র শর্ত দিয়েছিল, যুদ্ধক্ষেত্রে তা ব্যবহার করতে হবে। রাশিয়ার ভেতরে হামলায় এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। তবে সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এখন ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভেতরে এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলার অনুমতি দিয়েছে। তবে হোয়াইট হাউস এখনও বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সূত্র জানিয়েছে, এই এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ৩০৬ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
জানুয়ারিতেই ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন। তার আগে এই খবর সামনে এলো। তিনি আগে দাবি করেছিলেন, দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন।
রাশিয়া জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র যদি তাদের দেশের ভেতরে গিয়ে আঘাত করে, তাহলে যুদ্ধের তীব্রতা অনেকটাই বেড়ে যাবে।
কুপিয়ানস্ক দখল করতে চায় রাশিয়া
রাশিয়ার সেনা ইউক্রেনের উত্তরপশ্চিমের শহর কুপিয়ানস্ক আবার দখল করতে চাইছে বলে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার সেনা কুপিয়ানস্কে ঢোকার চেষ্টা করছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, চারবার রাশিয়ার সেনা এই শহরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়ার সেনা কুপিয়ানস্কের দক্ষিণে ওসকিল নদী পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া এই শহরটি দখল করে। পরে ইউক্রেনের সেনা আবার তা দখল করে নেয়।
পুতিনকে ফোন শলৎসের
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে গত শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) ফোনে কথা বলেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। চ্যান্সেলর শলৎস দাবি করেন, ইউক্রেন নিয়ে পুতিনের মনোভাবে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
ব্রাজিলে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে ওলাফ শলৎস সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তার বিস্তারে কথা হয়েছে। কিন্তু তার মতের পরিবর্তন হয়নি।
জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ‘এই যুদ্ধ তখনই বন্ধ হতে পারে, যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট তার সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাশা থেকে সরে আসবেন।’
রাশিয়ার সঙ্গে কেন ফোনে কথা বললেন, এমন প্রশ্নের জবাবে চ্যান্সেলর শলৎস বলেন, ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমা দেশের সমর্থন এবার কমে যাবে, এই ভুল ধারণা ভাঙানো দরকার ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিচ্ছেন। এই সময় ট্রাম্পের পাশাপাশি পুতিনের সঙ্গেও কথা বলা দরকার।
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক বলেছেন, ‘দুই বছরের মধ্যে প্রথমবার পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন শলৎস। তারপরেই ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করল রাশিয়া। বোঝা যাচ্ছে, ইউক্রেনকে সমর্থনের বিকল্প টেলিফোন-কূটনীতি হতে পারে না।’ তার মতে, আগামী কয়েক সপ্তাহ শুধু যুদ্ধের ক্ষেত্রে নয়, ভবিষ্যতের জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ।