পরিকল্পনামন্ত্রীর মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনায় পাঁচ আসামি রিমান্ডে
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় পাঁচ আসামিকে তিনদিন করে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন মো. সগির, মো. সুমন মিয়া, মো. জাকির, মো. হামিদ আহম্মেদ সোহাগ ওরফে আরিফ ও মো. জীবন।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার সদস্য কামরুল ইসলাম এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাত দিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তিন তিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
এদিকে আজ দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান জানান, গতকাল রোববার রাতের ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ছিনতাই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন মো. সগির, মো. সুমন মিয়া, মো. জাকির, মো. হামিদ আহম্মেদ সোহাগ ওরফে আরিফ ও মো. জীবন। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে থেকে একটি মোটরসাইকেল, বিভিন্ন মডেলের ১০টি ফোন, একটি ল্যাপটপ এবং মোবাইলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়।
ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘রমনা বিভাগের ধানমণ্ডি থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মন্ত্রীর চুরি যাওয়া মোবাইলসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।’
সাজ্জাদুর রহমান জানান, ধানমণ্ডি থানার একটি মামলার ভুক্তভোগী গত ১২ জুন বিকেলে রিকশায় করে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে থাকা অজ্ঞাতনামা দুজন ব্যক্তি তাঁর ভ্যানিটি ব্যাগ টান দিয়ে নিয়ে যায়। এরপর সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে মো. সগির ও সুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীকালে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ওই ভুক্তভোগীর মোবাইলফোনসহ পরিকল্পনামন্ত্রীর ছিনতাই হওয়া আইফোনটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান ডিসি সাজ্জাদুর রহমান।
এর আগে গত ৩০ মে পরিকল্পনা কমিশন থেকে বের হয়ে নিজের মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে বিজয় সরণির দিকে যাচ্ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ওই সময় গাড়ির জানালা খোলা ছিল। হঠাৎ এক ছিনতাইকারী পরিকল্পনামন্ত্রীর মুঠোফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে দৌড়ে পালায়। তদন্তের পর ওই ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করা গেছে বলে জানিয়েছিল পুলিশ।
পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন বলেছিলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয়ের মোবাইল ফোনটি একজন হেরোইনসেবী ছিনতাই করেছে। প্রথমে সে বুঝতে পারেনি যে, মন্ত্রীর মোবাইল ফোন ছিনতাই করেছে। পরে যখন বুঝতে পেরেছে তখন গা-ঢাকা দিয়েছে। ছিনতাইকারীকে চিহ্নিত করা গেছে। তার নাম-ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে। ওই ছিনতাইকারী রাস্তার মুখে স্থাপিত উড়োজাহাজের ভাস্কর্যের নিচে ঘুমাত। তাকে ধরতে অভিযান চলছে। আমরা তাকে দ্রুতই ধরে ফেলব বলে আশা করছি। সে মূলত ছিনতাই করে আর নেশা করে।’এ ঘটনার পর গত ১ জুন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের ব্যক্তিগত সহকারী কাফরুল থানায় একটি মামলা করেন। মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছিল, নভোথিয়েটারের উল্টো পাশ থেকে ছিনতাইকারী মুঠোফোনটি নিয়ে তেজগাঁওয়ের দিকে চলে যায়। সে সময় টিপটিপ বৃষ্টিও হচ্ছিল। সন্ধ্যা বলে অন্ধকারও ছিল। পরে পুলিশ জানিয়েছিল, ফোনটি ছিনতাইয়ের পর কয়েক দফা হাত বদল হয়ে হাতিরপুলের একটি দোকানে গিয়েছিল। সে দোকান থেকে একজন ক্রেতা ফোনটি ৩৫ হাজার টাকায় কিনে নেন বলে জানায় পুলিশ।