শিশু সন্তানকে হত্যা করে ঘরে পুঁতে রাখার অভিযোগে সৎ মা আটক

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে তিন বছর বয়সি আহম্মদ নামে এক শিশুকে হত্যা করে বসতঘরে গর্ত করে পুঁতে রাখার অভিযোগে সৎমাকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। শিশু আহম্মদকে হত্যার পর নিখোঁজের নাটক সাজানোর অভিযোগও উঠেছে সৎ মা কোহিনুর বেগমের বিরুদ্ধে। শিশু আহম্মদ হাজীগঞ্জ পৌরসভার রায়চোঁ জিয়ানগর এলাকার হাফেজ শাহ্ মিরানের প্রথম স্ত্রীর সন্তান।
হাফেজ শাহ্ মিরান বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমার স্ত্রী কোহিনুর আহম্মদকে নিয়ে তার বাপের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ৭ নম্বর দরবেশপুর ইউনিয়নের বাইল্যা চৌমুহনী চৌকিদার বাড়িতে বেড়াতে যায়। গত শনিবার (২৭ আগস্ট) আবার আমাদের বাড়িতে আসে। ওই দিনই বিকেলে আমাকে ফোনে জানায় আহম্মদকে পাওয়া যাচ্ছে না। আহম্মদ বিকেলে তার সাথে ঘুমিয়েছিল। ঘুম থেকে উঠে দেখে শিশু আহম্মদ নেই। বাড়ির সবাই অনেক খুঁজেও আহম্মদের সন্ধান না পেয়ে রোববার হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে আমাদের বাড়ির পুকুরে সন্ধান করা হয়। সেখানেও তার খোঁজ না পেয়ে আমি হাজীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) অন্তর্ভুক্ত করি। একপর্যায়ে জানতে পারি, আমার শশুরবাড়ির ঘরের দরজা জানালা সব বন্ধ। ঘরে স্থানীয় কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তখনই আমার স্ত্রী কোহিনুরকে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে গত শুক্রবার রাতে আহম্মদকে হত্যা করে তাদের ঘরের মেঝেতে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।’
পরে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ রামগঞ্জ থানাকে খবর দিলে রামগঞ্জ থানা পুলিশ কোহিনুরকে সঙ্গে নিয়ে চৌকিদার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ঘরের মেঝে খুঁড়ে আহম্মেদের মৃতদেহ উদ্ধার করে মরদেহ থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় সৎ মা কোহিনূর বেগমকে আটক দেখানো হয়। কোহিনুর বেগম বাইল্যা চৌমুহনী গ্রামের মৃত মোবারক কুট্রির মেয়ে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোহিনুরের মা রাহেলা বেগম ও খালাকে হেফাজতে নিয়েছে।
হাফেজ শাহ মিরন ও কোহিনুরের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। জানাজানি হলে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে কোহিনুরকে বিয়ে করেন শাহ মিরন। আহম্মদ তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কোহিনুর শিশু আহম্মদকে লাথি মেরে হত্যার কথা স্বীকার করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হাজীগঞ্জ থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের পর সৎ মা হত্যার দায় স্বীকার করার পর রামগঞ্জ থানায় কোহিনুর বেগমকে হস্তান্তর করা হয়।’
রামগঞ্জ সার্কেল এএসপি শেখ সাদী বলেন, ‘আমরা লাশ উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্ত শেষে বাবার কাছে হস্তান্তর করা হবে। হত্যার ঘটনায় সৎ মাকে আটক দেখানো হয়েছে। এতে আর কেউ জড়িত আছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখছি। আর কেউ থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।’