সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলশিদ এলাকায় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উৎসস্থলের একটি নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢুকে পড়ছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে জকিগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ভাঙনের ঘটনায় সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের তীব্র স্রোতে ভারতের সীমান্তবর্তী বরাক নদের মোহনায় বাঁধটি ভেঙে যায়। এরপর মুহূর্তেই জকিগঞ্জের ফিল্লাকান্দি, অমলশিদ, বারঠাকুরী, খাসিরচক, খাইরচক, বারোঘাট্টা, সোনাসারসহ বেশ কিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। একই সঙ্গে জকিগঞ্জ উপজেলা সদরের সঙ্গে অমলশিদ যাতায়াতের রাস্তাটিও পানিতে ডুবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে এ রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে থাকায় আগে থেকেই প্লাবিত উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতের বরাক নদ থেকে প্রবল বেগে পানি এখন সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে গিয়ে ঢুকছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তীব্র পাহাড়ি ঢলের ধাক্কায় বাঁধটি ভাঙতে ভাঙতে আজ শুক্রবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে সেটির কমপক্ষে ৬০ ফুট অংশ ভেঙে গেছে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সিলেট থেকে প্রায় ৯২ কিলোমিটার দূরে জকিগঞ্জের অবস্থান। এটি জেলার সবচেয়ে দূরবর্তী উপজেলা। ভারতের করিমগঞ্জ জেলার বরাক নদের দুটি শাখা হচ্ছে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদী। এদের মিলনস্থল হচ্ছে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলশিদ এলাকা। এই অমলশিদে একটি নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ আছে। বরাক থেকে পানি এসে প্রথমে সরাসরি এ বাঁধে আঘাত করে। এরপর পানি ভাগ হয়ে সুরমা ও কুশিয়ারায় প্রবাহিত হয়। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর মাধ্যমেই মূলত সিলেট বিভাগের প্রায় ১০০টি নদ-নদীতে পানি প্রবাহিত হয়। এখন বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পানি কোনো বাধা না পেয়ে তীব্র গতিতে সরাসরি সুরমা ও কুশিয়ারায় গিয়ে ঢুকছে। ফলে, পুরো সিলেট জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।

জকিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পল্লব হোম দাস বলেন, ‘বাঁধটি ভেঙে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। এতে নতুন করে উপজেলার কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় সিলেটের অন্যান্য উপজেলায়ও পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।’