রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা পর্যালোচনা করছে ঢাকা-বেইজিং
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের চলমান প্রচেষ্টা পর্যালোচনা করেছে বাংলাদেশ ও চীন। গতকাল রোববার (২৮ মে) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চীনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সময় বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও দ্রুত প্রত্যাবাসনে আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্য চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান ড. মোমেন।
মোমেন ও চীনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সান ওয়েইডন সম্মত হয়েছেন এই সমস্যার একটি জরুরি সমাধান প্রয়োজন। কারণ যদি কোনো সমাধান না করা হয়, তাহলে এটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি বাস্তব হুমকি হিসেবে বিকশিত হতে পারে।
মোমেন বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় চীনের উল্লেখযোগ্য অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভূয়সী প্রশংসা করেন ও আগামী দিনে গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দুই দেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও সভ্যতার সম্পর্ক উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৫০-এর দশকে চীন সফর এবং তিনি যা দেখেছিলেন তার ওপর তিনি যে বইটি লিখেছিলেন তার কথা উল্লেখ করেন।
পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রশংসা করে সান উল্লেখ করেন, ‘এই কাঠামোটি বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্বের একটি নতুন প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে। দুটি দেশ বৃহত্তর এবং আরও ভালো সমন্বয়ের মাধ্যমে বিস্ময়কর কাজ করতে পারে।’
মোমেন উভয় দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য বাংলাদেশে চীনা এফডিআইয়ের বৃহত্তর প্রবাহের আমন্ত্রণ জানান ও উৎসাহিত করেন। তিনি কোভিড-১৯ মহামারির সময় চীন যে সহায়তা দিয়েছিল, তা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঢাকায় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সংক্ষিপ্ত বৈঠকের কথা উল্লেখ করেন।
চীনে ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশের সুবিধার বিষয়ে আলোচনা করার সময় মোমেন আশা প্রকাশ করেন, ‘বাংলাদেশ যাতে এই ব্যবস্থা থেকে সর্বোত্তম সুবিধা পেতে পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় সম্মত হওয়া প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের ওপরও জোর দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সান বাংলাদেশের উদ্যমী যুব জনগোষ্ঠীর প্রশংসা করেন যারা সমাজ ও অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের দশম বার্ষিকীর কথা উল্লেখ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘বাংলাদেশ এই মহাপরিকল্পনা থেকে সর্বাধিক সুফল পাবে।’