অর্থপাচার মামলায় ঢাকা টাইমসের সম্পাদক আরিফুর রহমান কারাগারে
দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় ঢাকা টাইমস পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মাদ আরিফুর রহমান দোলনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আস-সামছ জগলুল হোসেন তার জামিন নাকচ করে করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। কিন্তু আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একইসঙ্গে আগামী ২২ এপ্রিল মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন। পিপি আরও বলেন, এর আগে আরিফুল উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নেন।
নথি থেকে জানা গেছে, দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে সিআইডি। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে গত ২২ জুন এ অভিযোাগপত্র দাখিল করা হয়। পরে আদালত মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন।
এর আগে ২০২১ সালের ৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) উত্তম কুমার সাহা ১০ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত বছর ১ সেপ্টেম্বর মামলাটি অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য ছিল। কিন্তু সেদিন মামলাটিতে কিছু অসঙ্গতি দেখতে পাওয়ায় আদালত স্বঃপ্রণোদিত হয়ে সিআইডিকে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনা মেনে নতুন করে আরও ৩৬ জনকে আসামি করে মোট ৪৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে সিআইডি।
রুবেল-বরকত ছাড়াও উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আপন ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, তার এপিএস সত্যজিৎ মুখার্জী, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, এ এইচ এম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম।
সম্পূরক অভিযোগপত্রের নতুন আসামিরা হলেন—নিশান মাহমুদ ওরফে শামীম, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. সিদ্দিকুর রহমান ওরফে সিদ্দিক, মো. সাইফুল ইসলাম জীবন, অ্যাডভোকেট অনিমেশ রায়, শামসুল আলম চৌধুরী, দীপক কুমার মজুমদার, শেখ মাহতাব আলী, সত্যজিৎ মুখার্জি, মো. শহীদুল ইসলাম ওরফে মজনু, ফকির মো. বেলায়েত হোসেন, গোলাম মো. নাছিম, মো. জামাল আহমেদ ওরফে জামাল, বেলায়েত হোসেন মোল্লা, মো. আফজাল হোসেন খান ওরফে শিপলু, অমিতাব বোস, চৌধুরী মো. হাসান, মো. জাফর ইকবাল ওরফে হারুন মন্ডল, বরকতের স্ত্রী আফরোজা আক্তার পারভীন, রুবেলের স্ত্রী সোহেলী ইমরুজ পুনুম, সাহেব সারোয়ার, আমজাদ হোসেন বাবু, স্বপন কুমার পাল, অ্যাডভোকেট জাহিদ বেপারী, খলিফা জামাল, হাফিজুল হোসেন তপন, রিয়াজ আহমেদ শান্ত, আনোয়ার হোসেন আবু ফকির, মো. মনিরুজ্জামান মামুন, মাহফুজুর রহমান, সুমন সাহা, মো. আব্দুল জলিল শেখ, মো. রফিক মন্ডল, খন্দকার শাহীন আহমেদ ওরফে পান শাহীন, আফজাল হোসেন খান ও সাংবাদিক মোহাম্মাদ আরিফুর রহমান ওরফে দোলন।
২০২০ সালের ২৬ জুন দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা দায়ের করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ।