ইভার দ্বিতীয় বিয়ের জেরে আইইউবিএটির ছাত্র খুন, আপন চাচাসহ গ্রেপ্তার ৩
ময়মনসিংহে আইইউবিএটির ছাত্র খুনের পর দেহ চার খণ্ড করার অভিযোগে আপন চাচাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে ধোবাউড়া উপজেলা থেকে কোতোয়ালি মডেল থানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।
আজ মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে নিজ সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এই খবর নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মাছুম আহমদ ভুইয়া।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নিহত ওমর ফারুক সৌরভের আপন চাচা ইলিয়াস আলী (৫৫), চাচার শ্যালক আহাদুজ্জামান ফারুক (৩০) ও গাড়িচালক আব্দুল হান্নান আকন্দ (৬৫)। তাঁরা হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানান পুলিশ সুপার মাছুম আহমদ ভুইয়া।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রায়হানুল ইসলাম, শামীম হোসেন (অপরাধ) কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন, জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি ফারুক হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার জানান, চাচাতো বোন ইভার সঙ্গে পাঁচ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক সৌরভের। গত ১২ মে ঢাকায় সৌরভ বিয়ে করেন চাচাতো বোন ইভাকে। এর দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে ইভার বিয়ে হয় কানাডা প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে। তাই দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে দুই পরিবারে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরপর ইলিয়াসের আপন ভাই সৌরভের বাবা ইউসুফ আলীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় এবং সৌরভকে মেরে ফেলার হুমকি দেন এবং মেয়েক কানাডায় পাঠিয়ে সৌরভকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ইভার বাবা ইলিয়াস। এরপর গত ১ জুন (শনিবার) সৌরভের চাচাতো ভাই মৃদুল সৌরভকে ময়মনসিংহের গোহাইলকান্দির বাসায় আসতে বলেন। সৌরভ বাসায় গেলে নিচতলার একটি রুমে নিয়ে তাঁর হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। পরে পরিকল্পনামতো ইলিয়াস ও তাঁর শ্যালক মাথায় ছুরিকাঘাত করে সৌরভকে হত্যা করেন। এরপর ধারালো চাপাতি দিয়ে সৌরভের দেহ চার খণ্ড করেন তারা। বাজার থেকে ট্রলি কিনে এনে সেই ট্রলিতে দেহের তিন খণ্ড এবং পলিথিনে মাথা পেচিয়ে মনতলা ব্রিজের নিচে ফেলে দেন তারা। গত রোববার সকালে পুলিশ মরদেহের চারটি খণ্ড উদ্ধার করে। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়লে সৌরভের স্বজনরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে এসে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেন। গতকাল সোমবার সৌরভের বাবা ইউসুফ আলী কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সৌরভের হত্যাকারীদের পরিচয় শনাক্ত এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করে।
নিহত ওমর ফারুক সৌরভের (২৪) বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায়। তাঁরা সপরিবারে ঢাকার মতিঝিল এলাকায় থাকেন।