সন্তানকে বাঁচাতে রেললাইনে ঝাঁপ, প্রাণ গেল মায়েরও
এক সন্তানকে কোলে ও আরেক সন্তানকে হাতে ধরে রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের ওপর হাঁটছিলেন সাবিনা আক্তার (২৫)। এমন সময় বেজে ওঠে চলন্ত ট্রেনের হুঁইসেল। আওয়াজে ভয় পেয়ে যায় পাঁচ বছর বয়সী মুনা। মায়ের হাত থেকে ছুটে প্ল্যাটফর্ম থেকে পড়ে যায় নিচে। দ্রুতগতির ট্রেন সেদিকেই ছুটে আসছে দেখে হতভম্ব হয়ে যান মা। কোলে তার আরেক সন্তান চার বছর বয়সী সিনা। দিশেহারা মা সন্তানকে বাঁচাতে ঝাঁপ দেন রেললাইনে। ততক্ষণে সব শেষ। ট্রেনের চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারায় দুজনেই। কোলের শিশুটিও হয় গুরতর আহত।
আজ শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নরসিংদী রেল স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী মো. শাহপরান এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, ঝাপ দেওয়ার আগে ওই মায়ের কোলে যে বাচ্চাটি ছিল, তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নিহত সাবিনার সঙ্গে থাকা তার ভাগ্নে তানিম জানায়, তার মামা বিদেশ থেকে সম্প্রতি দেশে এসেছেন। এদিকে তার এক চাচা বিদেশ যাবেন। তাই তারা চারজন নরসিংদীর ইন্ডেক্সপ্লাজায় কেনাকাটা করেতে এসেছিলেন। কেনাকাটা শেষে স্টেশন এলাকায় আসেন। ওই সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্রগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনেটি নরসিংদী স্টেশন অতিক্রম করছিল। তখনই এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী স্টেশন মাস্টার এ টি এম মুছা জানান, শিবপুর ইটাখোলা মুনসেফেরচর এলাকার মালয়েশিয়া প্রবাসী জয়নাল আবেদিনের স্ত্রী সাবিনা আক্তার (২৫), তার মেয়ে মাইন মুনা (৫) নিহত হয়েছেন। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে নিহত সাবিনার কোলে থাকা অপর শিশু সন্তান সিনাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ডা. মাহামুদুল বাশার কমল জানান, আহত শিশুটিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজন। তাকে বাঁচাতে সব রকম চেষ্টা করা হয়েছে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।