ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করে হত্যা, শামীম-আইভীসহ আসামি ৪৩০
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মনিরুল ইসলাম নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শামীম ওসমান, সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। আজ বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক।
গতকাল মঙ্গলবার দিনগত রাতে নিহতের ভাই নাজমুল হক বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১৩০ জনের নাম উল্লেখ এবং ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর নারায়ণগঞ্জের সবগুলো থানায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, জুনাইদ আহমেদ পলক, শামীম ওসমানসহ দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। তবে, কোনোটিতে সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর নাম ছিল না। এবারই প্রথম আইভিকেও আসামি করা হলো।
মামলায় নজরুল ইসলাম বাবু, গোলাম দস্তগীর গাজী, কায়সার হাসানাত, আজমেরী ওসমান, অয়ন ওসমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, কাউন্সিলর মতি, নূর উদ্দিন মিয়া, শাহজালাল বাদল, শাহ নিজাম, আইভীর ভাই শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা উজ্জ্বল, সাংবাদিক রাজু আহাম্মদ, অ্যাডভোকেট সুইটি ইয়াসমিন, কাউন্সিলর এনায়েত হোসেন, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুলসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১নং আসামি ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে সারা দেশের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও সন্ত্রাসীদের দ্বারা ছাত্র আন্দোলনকে প্রতিহত করার নির্দেশ প্রদান করলে ২নং হতে ৫নং আসামির নেতৃত্বে ৩০০-৪০০ জন আওয়ামী সন্ত্রাসী বন্দুক, শাটারগান, পিস্তল, তলোয়ার, রামদা, চাপাতিসহ অত্যাধুনিক দেশি ও বিদেশি অস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতাকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এ সময় আদমজী রোডে আল আমিন নগর পাওয়ার হাউজের সামনে তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সামনের দিকে এগোতে থাকে। আসামিরা তাদের সঙ্গে থাকা আগ্নোয়াস্ত্র দিয়ে চারদিকে গুলি ছুড়তে থাকে। আমার ভাই মিনারুল ইসলাম একজন গার্মেন্টস কর্মী। তিনি গত ২০ জুলাই আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টার দিকে মুজিব ফ্যাশনের সামনে গেলে ২নং আসামি শামীম ওসমান তার হাতে থাকা আগ্নোয়াস্ত্র দিয়ে আমার ভাইকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। ওই গুলি আমার ভাইয়ের বাম দিকের কিডনির নিচে লাগে। গুলিবিদ্ধ আমার ভাই তৎক্ষণাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে সাইদুল ইসলাম, কাওসার ও ডালিম মোল্লা অটোরিকশায় করে খানপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।