নিরাপত্তাজনিত কারণে আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে ভিসা ও কনস্যুলার সেবা বন্ধ
ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের ভিসা ও কনস্যুলার সেবা কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সহকারী হাইকমিশনের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান মো. আল আমীনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, নিরাপত্তাহীনতাজনিত অবস্থার প্রেক্ষাপটে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন আগরতলায় সব ধরনের ভিসা ও কনস্যুলার সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা চালায় দেশটির কট্রর হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠন। এ ছাড়া মুম্বাইয়ের বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সামনে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) আয়োজনে বিক্ষোভ হয়। এই হামলার বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে নিন্দা ও কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলার ঘটনা বাংলাদেশ সরকারকে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ করেছে। ঘটনাপ্রবাহ দেখে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত। এ ঘটনা কূটনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক ভিয়েনা সনদের লঙ্ঘন। পরে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করা হয়।
এর আগে ২৮ নভেম্বর কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনের বাইরে ‘বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ’ নামে কলকাতার একটি ধর্মীয় সংগঠন সহিংস বিক্ষোভের আয়োজন করেছিল। বিক্ষোভকারীদের একটি বড় দল আয়োজিত সমাবেশ ও বিক্ষোভ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে, বিক্ষোভকারীরা পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের সীমানায় পৌঁছে যায়।
ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সামনে বাংলাদেশের পতাকা পোড়ানো ও সহিংস বিক্ষোভের প্রতিবাদ জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি শুক্রবার ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানায় ঢাকা।
যদিও আজ মঙ্গলবার তলব করা হলে পররাষ্ট্র দপ্তরে উপস্থিতির পর বেরিয়ে এসে ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাবে নয়াদিল্লি। আমাদের পরস্পর নির্ভর অনেকগুলো বিষয় রয়েছে, যা দুদেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। সর্বশেষ দুই মাসে আমাদের পরস্পর সহযোগিতার জন্য ইতিবাচক কিছু উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের অনেক ইতিবাচক বিষয় রয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। কোনো নির্দিষ্ট একটি ইস্যু দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক মূল্যায়ন করা যাবে না বলেও জানান ভারতীয় হাইকমিশনার।