একুশে পদকপ্রাপ্ত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার মারা গেছেন
চলে গেলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
গণমাধ্যমকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন পাপিয়া সারোয়ারের স্বামী সারওয়ার আলম। তিনি জানিয়েছেন, মরদেহ বর্তমানে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা আছে। আগামীকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর জানাজা শেষে পাপিয়াকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ তিন বছর ধরে মরণব্যাধী ক্যানসারে ভুগছিলেন পাপিয়া সারোয়ার। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সম্প্রতি অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ‘লাইফ সাপোর্ট’ দিয়ে রাখা হয়। আজ সকালে তাকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
১৯৫৩ সালের ২১ নভেম্বর বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন পাপিয়া সারোয়ার। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। ১৯৭৩ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে রবীন্দ্রসংগীতের ওপর ডিগ্রি অর্জন করেন।
এর আগে ১৯৬৬ সালে ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সানজীদা খাতুন ও জাহেদুর রহিমের কাছে এবং পরে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে সংগীতে দীক্ষা নেন প্রয়াত এই শিল্পী।
১৯৬৬ সালে ‘গীতসুধা’ নামে একটি গানের দল প্রতিষ্ঠা করেন পাপিয়া সারোয়ার। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি রবীন্দ্রসংগীতের জন্য শ্রোতাদের প্রচুর ভালোবাসা পেয়েছেন। জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন আধুনিক গানেও। তার গাওয়া ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম’ গানটি ব্যাপকভাবে পরিচিত এবং শ্রোতাপ্রিয়।
২০১৩ সালে বাংলা একাডেমির রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন পাপিয়া সারোয়ার। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি তাকে ফেলোশিপ দেয়। ২০২১ সালে পান দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক। এমন একজন প্রথিতযশা শিল্পীর মৃত্যুতে দেশের সংগীত অঙ্গণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ব্যক্তিজীবনে পাপিয়া সারওয়ার ১৯৭৮ সালে মোহাম্মদ সারওয়ার আলমকে বিয়ে করেন। তাদের দুই কন্যাসন্তান। তাদের একজন জারা সারওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির একটি কলেজের জীববিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক এবং জিশা সারওয়ার কানাডার অর্থমন্ত্রণালয়ের একজন পাবলিক এক্সিকিউটিভ।