অগ্নিদগ্ধ হয়ে শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু, ৮ শিক্ষক বহিষ্কার
চাঁদপুরের কচুয়ায় ৪১নং তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থী অগ্নিদগ্ধ সামিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় আট শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে তদন্ত সাপেক্ষে আট শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা মেহার ইয়াসমিন।
এ ঘটনায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এই সিদ্ধান্ত নেয়।
বহিষ্কৃত শিক্ষকরা হলেন ফারুক হোসেন, জসিম উদ্দিন, সাহিদা আক্তার, সুমি আক্তার, রোকেয়া আক্তার, কাজী শাকিরীন, ফয়েজুন নেছা ও ফাতেমা আক্তার। সহকারী শিক্ষিকা হাফসা আক্তার ওই দিন ছুটিতে থাকায় তাঁদের দুজনকে বহিষ্কার করা হয়নি।
শিশু শিক্ষার্থীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২১ জানুয়ারি সকালে তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে খেলা করছিল প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়া। ওই সময় বিদ্যালয় আঙিনায় ময়লার স্তূপে আগুন দেন বিদ্যালয়ের কর্মচারী সুমন মজুমদার। সেখানে খেলার ছলে একটি প্লাস্টিকের বলপেনে আগুন ধরায় আরেক শিক্ষার্থী। দুষ্টুমির ছলে একপর্যায়ে আগুন সামিয়ার পরনে থাকা কাপড়ে লাগিয়ে দেয় ওই শিশু। এতে দগ্ধ হয়ে সামিয়ার শরীরের ৭০ ভাগ আগুনে ঝলসে যায়। ঘটনার পর সামিয়াকে প্রথমে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাঁচ দিন পর ২৬ জানুয়ারি মারা যায় সে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ওই বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষকের মধ্যে আটজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এটি একটি দুর্ঘটনা। এতে শিক্ষকদের অবহেলা ছিল। এ কারণে তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আট শিক্ষককে দায়িত্বে অবহেলার জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রধান শিক্ষক মাসুক হাসানকে বরখাস্তের জন্য বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া সুমন মজুমদার নামে এক কর্মচারীর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ আরও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।