‘ভূমিকম্প থেকে জনগণকে রক্ষায় জরুরি করণীয় ঠিক করা উচিত’
ভূমিকম্প থেকে জনগণকে রক্ষায় সরকারের এখনই জরুরি ভিত্তিতে করণীয় ঠিক করা উচিত বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, এখন থেকে যদি আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে অর্থাৎ বর্তমান সরকার যারাই আছেন যদি জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন, পুরনো ঢাকার যে বিল্ডিংগুলোর কথা মনে মনে চিন্তা করেন আর তুরস্কে বা ইরানে যে ভূমিকম্প হয় বা আফগানিস্তানে যে ভূমিকম্প হয় সেটার চিন্তা করেন। আর আজকে সকালে ভূমিকম্পে নিশ্চয়ই ভাবার কোনো কারণ নেই যে আমরা খুব আরামে থাকার সম্ভাবনা আছে।
আজ শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, সার্বিকভাবে আমি সরকারকে এবং সেই সঙ্গে সচেতন সকল মানুষকে এবং এটার সঙ্গে বিশেষ করে জিওলজিক্যাল সার্ভে এবং যারা বিল্ডিংয়ের ডিজাইন অ্যান্ড প্লানিং করেন সবকিছু মিলিয়ে আমার মনে হয়, দিস ইজ রাইট টাইম। আর বেশি দেরি করলে বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তার থেকে যাতে কম ক্ষয়ক্ষতি কীভাবে করা যায় তার উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আপনারা জানেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হচ্ছে ব্রাজিলে। সারা পৃথিবীর যারা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী যেসব উন্নত দেশ তাদের রেসপন্স ঠিক ততটুকু নেই। যার জন্য ইদানিংকালে দেখবেন বাংলাদেশে কখনো দেখা যাচ্ছে, শীত খুব লম্বা হচ্ছে; কখনো গরম বেশি পড়লে, কখনো কখনো আমাদের নিম্নাঞ্চল পানি তলায় তলিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, অর্থাৎ আমরা যারা ২০/২৫/৫০ বছর যে ভূরাজনৈতিক এবং জলবায়ুর যে অবস্থা ছিল তারা বুঝতে পারছেন আগের আর বর্তমানের পরিবর্তন কী।
‘সেই পুরনো সন্ত্রাস’
ডা. জাহিদ বলেন, সেই পুরনো আগুন সন্ত্রাসের কথা অনেকের মনে আছে, শেরাটন হোটেলের সামনে দ্বিতলা বিআরটিসি বাসে গানপাউডার দিয়ে ১১ জন মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল ১৭৪ দিন হরতাল করে। সেই সময়ে যারা করেছিল তারাই দেখেন আজকে বিচারের রায় হবে, সেটার আগে এবং পরে বিভিন্নভাবে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা-উৎশৃঙ্খলা এবং সেই পুরনো আগুন সন্ত্রাসকে নিয়ে তারা আবার মাঠে নেমেছে।
ডা. জাহিদ বলেন, কাজেই জাতি ৫ আগস্টের পরে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ ছিল আজকে যদি আমাদের মধ্যে বিভাজন হয় তাহলে লাভ হবে কাদের? লাভ হবে ওই পতিত বা পলায়নকৃত স্বৈরাচারের আর দোসররা লেগে আছে। ওই ফাঁক দিয়ে আমাদের ঐক্যের যদি বিনষ্ট করতে পারে, সেই ফাটল দিয়ে ঢুকে পড়তে চেষ্টা করবে পতিত স্বৈরাচার। স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু তাদের দোসররা কিন্তু আছে। মনে রাখতে হবে আপনার আমার আশপাশের মানুষগুলোর প্রতি খেয়াল রাখতে হবে তারা কী করছে? তারা কী আচরণ করছে?
নির্বাচনের জন্য জনগনের রায় মেনে নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মৎস্যজীবী উত্তরের আহ্বায়ক আমির হোসেন আমিরের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিনের সদস্য সচিব কে এম সোহেল রানা ও উত্তরের সদস্য সচিব বাকি বিল্লাহর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় মৎস্যজীবী দলের সদস্য সাবেক সচিব আবদুর রহিম, দক্ষিণের আহ্বায়ক শাহ আলমসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
উল্লেখ্য, সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ঢাকাসহ সারা দেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর মাত্রা ছিলো ৫ দশমিক ৭। এই সময়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মতস্যজীবী দল ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভা হয়।
আলোচনা সভায় নেতা-কর্মীরা যখন মিলনায়তনে ভেতরে তখন হঠাৎ করে ভূমিকম্পে নেতা-কর্মীরা দ্রুত মিলনায়তন থেকে বেরিয়ে আসে।

নিজস্ব প্রতিবেদক