নগরবাসীর উদ্দেশে যা বললেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর
আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী ও সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর নগরবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘নির্বাচন আইনে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে হয়, গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে হয়—আমি সেই পদ্ধতিতে একজন নাগরিক হিসেবে আমি মনোনয়ন জমা দিয়েছি। আমি জানি, আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হতে পারে। আমার জীবন থাকতে পারে নাও থাকতে পারে। হয়তো কালকের পর আমার পায়ে শিকল পড়তে পারে। আমাকে এরেস্ট করতে পারে, আমাকে গুম করতে পারে।’
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বেরিয়ে বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামের গেটের সামনে জাহাঙ্গীর আলম এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি ১৮ মাস ধরে মিথ্যার দায় বহন করছি। এটা থেকে আমি মুক্তি পেতে চাই। আমি দেশবাসী ও নগরবাসীকে বলে যেতে চাই। যদি আমার মৃত্যু হয়, আপনারা বিশ্বাস করবেন আমি এই শহর রক্ষা করতে গিয়ে যা যা ভালো কাজ আছে সব করেছি। আমি যদি এই শহরের উন্নয়ন করে থাকি তাহলে নাগরিকদের পায়ে হাত দিয়ে সহযোগিতা চাই। এই শহরকে রক্ষা করতে হবে। না হলে এই শহর ধ্বংস করার জন্য কিছু লোক পায়তারা করছে। আমি এই শহরের মানুষের কোনো ক্ষতি হয়—এমন কিছু করি নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার এবং এই শহরের মানুষের ক্ষতি করা হয়েছে।’
জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন পাঁচ বছরের জন্য একটা নির্বাচিত মেয়রকে কীভাবে মিথ্যা, বানোয়াট একটা চিঠি দিয়ে তিন বছরে আমাকে এ রকম করেছে। এখানে একটা মিথ্যার জয় হয়ে গেছে, সত্যের পতন ঘটেছে। আমার প্রতি যে অন্যায়-অত্যাচার করা হয়েছে সে হিসেবে আমার মাও আজকে দাঁড়িয়েছে। আমি সন্তান হিসেবে আমার মাকে রক্ষা করার জন্য আমার জীবন এখানে প্রস্তুত রেখেছি। আমি এই শহর রক্ষা এবং নেতাকর্মীদের রক্ষা করার জন্য যা করা প্রয়োজন তার জন্য আমি প্রস্তুত আছি। আমি আপনাদের কাছে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু, সুন্দর একটা ভোট চাই। আমাকে ও আমার পরিবারের যে ক্ষতি করা হয়েছে, তার প্রতিবাদ হিসেবে আগামী ২৫ মে আপনারা একটা করে ভোট দিবেন। ইনশা আল্লাহ সত্যের জয় হবেই হবে। এই জয়টার জন্যই অপেক্ষা করছি।’
এর আগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র জমা দেন জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় তাঁর মা উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর পক্ষে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সাবেক সদস্য আসকর আলী, সাবেক সহদপ্তর সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম এবং সাবেক গাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাদির।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আপনারা জানেন, ২০১৮ সালে লাখ লাখ ভোটারের ভোটে নির্বাচিত মেয়র। আমার বিরুদ্ধে কী করা হয়েছে। আমার নগরবাসী আমাকে পাঁচ বছরের জন্য এখানে নির্বাচিত করেছিল। কী ঘটনার মধ্য কী অবস্থায় আজকে আমি এখানে এসে দাঁড়িয়েছি। সে হিসেবে আপনাদের কাছে এবং নগরের প্রত্যেকটি ভোটারের কাছে বলতে চাই, আমি যদি এই শহরের মানুষের উপকার করে থাকি, ভালো কিছু করে থাকি—তাহলে তাদের পায়ে হাত দিয়ে বলছি; আমি সবার কাছে সহযোগিতা চাই।’
জাহাঙ্গীর আরও বলেন, ‘এই শহর, এই নগরটাকে রক্ষা করতে হবে। তা না হলে কিছু লোক এই শহর এই নগরটাকে ধ্বংস করতে পাঁয়তারা করছে, তৈরি হয়েছে। পাঁচ বছরের জন্য যেহেতু আমি নির্বাচিত মেয়র, আমার কিন্তু পাঁচ বছর এখনও যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সব নাগরিকের প্রতি আমি অনুরোধ করব, আমার প্রতি যে অন্যায়-অবিচার করা হয়েছে, মিথ্যাচার করা হয়েছে, একজন জনপ্রতিনিধির ওপর যদি এসব করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের যেসব বিশ্বাসের জায়গা আছে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। সেজন্য আমি মনে করি, আমি এ শহরের মানুষে সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব। আমি এই শহরের মানুষকে রক্ষা করার জন্য যা যা প্রয়োজন সব কিছু করার জন্য প্রস্তুত আছি।’