‘অন্যরকম’ ছবি করতে চান অক্ষয়
‘আমি চাই অন্য রকম ছবি করতে। নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতেই আমার ভালো লাগে। ভগবানকে ধন্যবাদ, তিনি আমাকে এত সুন্দর একটা স্বাস্থ্য দিয়েছেন। ফিটনেস দিয়েছেন। তাহলে আমার সেটা কাজে লাগানো কি অন্যায়?’ এভাবেই নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে সওয়াল করলেন বলিউড অভিনেতা অক্ষয়কুমার। নানা ধরনের চরিত্রে ব্যতিক্রমী অভিনয় করে দর্শকের মনোরঞ্জন করাই এখন তাঁর একমাত্র লক্ষ্য।
তবে কাজের নেশায় তিনি যতই মশগুল থাকুন না কেন, দিনে আট ঘণ্টার বেশি কাজ করতে চান না। অক্ষয়ের হিসাবমতে, ৩৬৫ দিনে এক বছর। আর একটা ছবি করতে সময় লাগে কমবেশি ৬০ দিন। তাহলে চারটি ছবি করতে লাগে ২৪০ দিন। এর পরেও হাতে থাকে ১২৫ দিন, যে দিনগুলো কার্যত ফাঁকাই পড়ে থাকে। যাঁরা বলেন বছরে একটার বেশি ছবি করা যায় না, তাঁদের কথা কিন্তু তাহলে অক্ষয়ের কাছে ধোপে টেকে না। বছরে চারটি হোক কিংবা পাঁচটা হোক যে কটাই ছবি তিনি করুন না কেন, ছবির কোয়ালিটির সঙ্গে একেবারে ‘নো কম্প্রোমাইজ’!
আজ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে রোজগার করার জন্য যে তিনি শুধু অভিনয় করেন, তা কিন্তু নয়। নিজেই জানালেন, ‘আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে টাকার প্রয়োজন ছিল, এ কথা সত্যি। সেই সঙ্গে তখন পায়ের তলায় জমি শক্ত করারও একটা ব্যাপার ছিল। তবে এখন আর সেসব মুখ্য বিষয় নয়। এখন চাই অন্য রকমের ছবি করতে।’
নিজের ফিটনেসের জন্য এখনো নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে থাকেন এই বলিউড অভিনেতা। ছোটবেলার রুটিন বড় হয়েও বদলাননি একচুল। প্রতিদিন ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ শুরু হয়ে যায় তাঁর দিন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ডিনার সেরে ফেলেন। নিয়মিতভাবে করেন ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ। পার্টি করেন না।
সময় পেলেই বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন। বলিউডের নায়ক-নায়িকাদের মতো খরচের বাহারও নেই তাঁর। সর্বসাকল্যে ব্যক্তিগত মাসিক খরচ মাত্র তিন হাজার টাকা। জানালেন, ‘শুটিংয়ে গেলে সব খরচ প্রযোজকের। তাঁরাই বাড়ি থেকে গাড়ি করে নিয়ে যান। আবার গাড়ি করে দিয়েও যান। খাওয়া-দাওয়া তাঁরাই দেন। আর আমি নিজে সিগারেট-মদ ছুঁই না। আলাদা করে কোনো শখও আমার নেই। সুতরাং আমার বাড়তি খরচও নেই।’ এতদিনের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা থেকে অক্ষয় জানালেন, ‘সাধারণত সিংহ কিংবা বন্য জন্তুর সঙ্গে শুটিং করা প্রচণ্ড কঠিন। তবে আমার মনে হয়, তার চেয়েও বেশি কঠিন ছোট বাচ্চাদের সঙ্গে অভিনয় করা।’ ‘হেই বেবি’ ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে নাকি তেমনটাই অভিজ্ঞতা হয়েছে অক্ষয়ের। হাসতে হাসতে বললেন, “শিশুরা ওদের থেকেও ভয়ংকর। জন্তুদের তাও ‘ওয়াক’, ‘সিট’, ‘কাম’ বললে শুনবে। কিন্তু বাচ্চারা! ওরা এত মুডি হয় যে, ওদের মুড বুঝে কাজ করতে হয়। তার ওপর দিনে শুটিং করবে এক থেকে দুই ঘণ্টা। তার মধ্যেই ওদের মুড বুঝে কাজ সারতে হবে।”
বর্তমানে অভিনয়ের ক্ষেত্রে ভ্যারাইটি আনছেন অক্ষয়। আগে শুধু অ্যাকশন ফিল্মেই অভিনয় করতেন। এখন কমেডিও করছেন। তিনি মনে করেন, সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার চেষ্টা করা উচিত। আর এটা করতে গিয়ে যেমন বহু ছবি ফ্লপ হয়েছে, তেমনি হিট, সুপারহিট ছবিও হয়েছে। তবে সেজন্য তিনি অনুতপ্ত নন, বরং গর্বিত।
অক্ষয়ের স্ত্রী টুইঙ্কল এখন আর অভিনয় করতে চান না বলেও জানিয়ে দিলেন তিনি। বললেন, টুইঙ্কল সিনেমার পরিবার থেকে এসে মাত্র ১৪টি ছবিতে অভিনয় করে বিদায় জানিয়েছে বলিউডকে। তারপর ইন্টেরিয়র ডিজাইন এবং এখন বই লেখায় মন দিয়েছে। সব মিলিয়ে পেশা-পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতেই রয়েছেন বটে বলিউডের ‘খিলাড়ি’ কুমার।