মায়ের অনুরোধে ক্রিকেট ছাড়েন স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত!
দুই বাংলার জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী স্বাগতালক্ষী দাশগুপ্ত। আজ সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে নিজে প্রতিষ্ঠিত হলেও ছোটবেলা থেকে তাঁর প্রিয় ছিল ক্রিকেট খেলা। তবে কলেজে ওঠার পর ক্রিকেট খেলা বন্ধ হয়ে যায়। সেটাও মায়ের অনুরোধে। পাড়ার ম্যাচে ফার্স্ট স্লিপে ফিল্ডিং করার সময় বল এসে লাগে চোখে। ব্যাস তারপরই মায়ের কড়া নির্দেশ, খেলা ছাড়তে হবে। এভাবেই নিজের ফেলে আসা জীবনের কথা সংবাদমাধ্যমের কাছে তুলে ধরলেন জনপ্রিয় এই সঙ্গীতশিল্পী।
স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত বলেন, ‘গান নিয়ে কখনই তেমন কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল না আমার। বাবার সঙ্গে নিয়ম করে রেওয়াজ করার অভ্যাসটাও ছিল না।’ তবে গান গাইতে ভালোবাসতেন। আর যেখানে যা শুনতেন তাই মাথায় কপি হয়ে যেত। তারপর সেই সব গান বন্ধুদের গেয়ে শুনিয়ে রীতিমতো চমকে দিতেন। জানালেন, প্রথাগত সংগীত শিক্ষাকে চিরকালই ফাঁকি দিয়ে এসেছেন তিনি।
স্বাগতালক্ষ্মীর বাবা-মা দুজনেই ছিলেন সঙ্গীতপ্রেমি মানুষ। তাই স্বাভাবিকভাবেই ছোট থেকে তাঁর রক্তে বাসা বেঁধেছিল গান। ছোট থেকেই স্কুল হোক বা কলেজ হোক সবখানেই গান গেয়ে প্রশংসা পেয়েছেন তিনি। তবে গান গাওয়ার পাশাপাশি ক্রিকেট আর টেবিল টেনিস খেলাও ছিল তাঁর সমান প্রিয়।
উচ্চমাধ্যমিকের পর পরিবারের সবাই চেয়েছিলেন ইংরেজি নিয়ে পড়ুন স্বাগতালক্ষ্মী। কিন্তু পড়লেন বাণিজ্য নিয়ে। তারপর গ্রাজুয়েট হয়ে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি পড়তে চলে গেলেন দিল্লি। সেখানে গিয়ে নিঃসন্তান কাকা-কাকিমার কাছে থাকতে থাকতেই সংগীতের প্রতি টান অনুভব করেন তিন। এরপর একসময় দিল্লির পড়াশোনা বন্ধ করে কলকাতায় চলে আসেন তিনি। তালিম শুরু করেন রবীন্দ্রভারতীতে। তারপর থেকে ধীরে ধীরে নিজস্ব গায়কি ঘরানা তৈরি হয় তাঁর।
স্বাগতালক্ষ্মী বলেন,’ রবীন্দ্রসংগীত আজ আমার ঈশ্বর চেতনাকেও বদলে দিয়েছে।’ তবে আধ্যাত্মবাদকে সঙ্গী করে তিনি বাড়িতে পুজোর ঘরে রেখেছেন কালী ও কোরান। যেকোনো কাজে ভাইব্রেশন তাঁর কাছে অত্যন্ত জরুরি। কোনো কাজে পজিটিভ ভাইব্রেশন না পেলে সে কাজে হাত দিতে চান না তিনি। সৌরজগত, মহাবিশ্ব নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট কৌতূহল। তবে জানালেন, রবীন্দ্র ভাবনা তাঁকে ধীরে ধীরে নিয়ে যাচ্ছে মনের মানুষের কাছে।
গতানুগতিক জীবন। তবে সেই জীবনেও শুধু গান, আধ্যাত্মবাদ নয়, রয়েছে বসন্তের আনাগোনাও। নিজেই বললেন, ‘প্রেমে পড়েছি বহুবার। এখনো পড়ি। তবে ব্যাটে বলে হয়নি সবসময়।’

মনোজ বসু, কলকাতা