তরুণরা আমাকে বাংলার মাইকেল হিসেবে চেনেন : কুদ্দুস বয়াতি
দেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী কুদ্দুস বয়াতি লোকগীতি ও বাউল সংগীত গেয়ে পেয়েছেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা। কখনো তাঁকে ‘হিপহপ’ ধরনের গান গাইতে দেখা যায়নি। সম্প্রতি সোমেশ্বর আলীর কথায় ‘আসো মামা হে’ শিরোনামে একটি হিপহপ দ্বৈত গানে কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি মিউজিক ভিডিওর মডেল হয়েছেন কুদ্দুস বয়াতি। তাঁর সঙ্গে গানটিতে কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি এর সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন প্রীতম হাসান। গানটি ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে আলাপ করেছেন সংগীতশিল্পী কুদ্দুস বয়াতি।
প্রশ্ন : আপনি তো ‘হিপহপ’ ধরনের গান গান না। ‘আসো মামা হে’ গানটি গাইতে কেন আগ্রহী হলেন?
উত্তর : প্রথমত গানের কথাগুলো আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। আর এখন তো ডিজিটাল দেশ। সবকিছুই আধুনিক। বাংলাদেশ তো এক সময় আধুনিক ছিল না। আমরা একতারা, দোতরা দিয়ে গান গাইতাম। এখন তো অনেক আধুনিক যন্ত্র তৈরি হয়েছে। আগে মানুষ ছিল সাত কোটি। আর এখন ১৬ কোটি মানুষ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুর পরিবর্তন হয়েছে। তাই আমাদের ঐতিহ্য ধরে রেখে হিপহিপ গান গাইতে আমার কোনো আপত্তি নেই। আমি এখন পাঁচমিশালী গান করেই বেশি মজা পাই। যুগের চাহিদার কথা আমিও চিন্তা করি।
প্রশ্ন : তানিম রহমান অংশুর পরিচালনায় গানটির মিউজিক ভিডিও নির্মিত হয়েছে। গানটির মিউজিক ভিডিওর মডেল হওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন?
উত্তর : খুব আনন্দ নিয়ে কাজটা করেছি। আমরা আগে গ্রামে কুপিবাতি জ্বালিয়ে গান গাইতাম। বলা যায়, গান গাওয়ার সময় চারপাশ অন্ধকারেই থাকত। কেউ গান শুনতে পেলেও আমাকে দেখতে খুব কষ্ট হতো তাদের। এখন তো চারপাশে আলো আর আলো। যেমন, আমি যে মিউজিক ভিডিওটা করলাম এটা তো সারা বিশ্বের মানুষ দেখতে পাবে। এটা আমার কাছে বিস্ময়ের ব্যাপার। আমি সুযোগ পেলেই ইউটিউবে নতুন শিল্পীদের গানের মিউজিক ভিডিও দেখি। এখনকার শিল্পীরা মুক্ত চিন্তা করতে ভালোবাসে। আর এখন অনেক ভেজালের মাঝেও সুস্থ ধরনের গানও তৈরি হয়। এটা আমি বিশ্বাস করি। আসছে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ৯ এপ্রিল মিউজিক ভিডিওটি ইউটিউবে ছাড়ার কথা রয়েছে। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা গানটি কীভাবে নিবে, এটা জানার জন্য অপেক্ষা করছি।
প্রশ্ন : এখনকার তরুণ ভ্ক্তদের আপনার সম্পর্কে অভিমত কী?
উত্তর : তরুণরা তো আমাকে বাংলার মাইকেল হিসেবে চেনেন। কারণ আমিও গান গাওয়ার সময় মাইকেল জ্যাকসনের মতো করে অভিনয় করি। এটা সবাই উপভোগ করেন। গান গাওয়ার সময় নাচ ও অভিনয় করতে দারুণ লাগে আমার।
প্রশ্ন : দীর্ঘদিন ধরে গান গাইছেন। আপনার কোনো অতৃপ্তি আছে কি?
উত্তর : আমাকে ভক্তরা অন্তরে রেখেছেন, এটাই আমার কাছে বড় প্রাপ্তি। অনেক কষ্ট করে আমরা এ দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এটা ধরে রাখতে হবে। আর লালনের বাংলাদেশে লোকজ গানের চর্চা কখনো যেন হারিয়ে না যায়। আমার অতৃপ্তি নেই তবে আমার একটা চাওয়া আছে, তা হলো- যেকোনো সরকারি অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীতের পর লোকগান দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করলে ভালো হয়। এটা আমার মনের কথা।

নাইস নূর