ছিলেন অঞ্জনা সাহা, বিয়ের করে হয়েছিলেন অঞ্জনা রহমান
ছোটবেলা থেকে নৃত্যের প্রতি আগ্রহের কারণে বাবা মা তাকে নৃত্য শিখতে ভারতে পাঠান। সেখানে ওস্তাদ বাবুরাজ হীরালালের অধীনে নাচের তালিম নেন এবং কত্থক নৃত্য শিখেন অঞ্জনা রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাত্র চার বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে অঞ্জনার আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর আর থেকে থাকেননি। নৃত্যশিল্পী হিসেবে ছোট থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেছেন। সাদাকালো থেকে রঙ্গিন বাংলা চলচ্চিত্রের সাক্ষী গুণী এই অভিনেত্রী। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে প্রায় তিন শতাধিক সিনেমাতে কাজ করেছেন একজন অঞ্জনা।
ক্যারিয়ারের শুরুতে অঞ্জনার নাম ছিল অঞ্জনা সাহা। বিয়ের কারণে নিজের ধর্ম পরিবর্তন করেছিলেন এই চিত্রনায়িকা। অঞ্জনা বিয়ে করেন পরিচালক আজিজুর রহমান বুলিকে। তাঁদের বিচ্ছেদও হয়ে যায়।
দেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে নিজের নাম পরিবর্তনের ব্যাপারে ২০২৩ সালের অক্টোবরে অঞ্জনা জানিয়েছিলেন, ‘আমার বিয়ের পর নামের সঙ্গে রহমান যুক্ত হয়েছে। সেটা এখনো আছে। আমি সাহা পরিবারের, হিন্দু ছিলাম আমি।’
যে বিয়ের কারণে নাম পরিবর্তন সেই বিয়ে না টেকার পরও একই নামে থাকার কারণ হিসাবে নায়িকার ভাষ্য, ‘বিয়ে না টিকুক। যেহেতু আমি ধর্ম পরিবর্তন করে ফেলেছি, আর পেছনে যাওয়া যাবে না।’ সেই সাক্ষতকারে নিয়মিত নামাজ-রোজা করার কথাও জানিয়েছিলেন এই চিত্রনায়িকা।
অঞ্জনার অভিনয়জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে। বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। তবে অঞ্জনা অভিনীত ও একই বছর মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ‘দস্যু বনহুর’। ছবিতে তার নায়ক ছিলেন সোহেল রানা।
১৯৭৬ সালের এই সিনেমার পর টানা কাজ করেছেন অঞ্জনা। একে একে অভিনয় করেন ‘মাটির মায়া’, ‘অশিক্ষিত’, ‘চোখের মণি’, ‘সুখের সংসার’, ‘জিঞ্জির’, ‘অংশীদার’ ,‘আনারকলি’, ‘বিচারপতি’, ‘আলাদীন আলীবাবা সিন্দাবাদ’, ‘অভিযান’, ‘মহান’ ও ‘রাজার রাজা’, ‘বিস্ফোরণ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘রাম রহিম জন’, ‘নাগিনা’, ‘পরীণিতা’ ইত্যাদি বাণিজ্যিক সফল সিনেমায়।
অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আন্তর্জাতিক পুরস্কার, একাধিক জাতীয় স্বর্ণপদক ও বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন কয়েকবার।
নৃত্যশিল্পী হিসেবেও অঞ্জনা পেয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক স্বীকৃতি।‘পরিণীতা’ ও ‘গাঙচিল’-এ অভিনয়ের জন্য দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন।