একটি ডিম প্রতিদিন
সকালের নাশতায় ডিম না হলে আমাদের চলেই না। ডিম অতি পুষ্টিকর খাবার। সারা বিশ্বেই ডিমের প্রয়োজনীতা সবাই অনুভব করে। আজ আমরা একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত এক স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠানে ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ আয়েশা সিদ্দিকা। তিনি বলেন, অনেকে ডিম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন এ কারণে যে, ডিম খেলে মুটিয়ে যাবেন। আসলে কিন্তু তা নয়। প্রতিদিন একটি করে ডিম খাবেন। ডিমে যে পর্যাপ্ত অ্যালবুমিন রয়েছে, এই প্রোটিন শুধু ডিম থেকেই পাওয়া সম্ভব। আর কোনো খাবার এর অভাব পূরণ করবে না। ক্যানসার প্রতিরোধে ডিমের অ্যালবুমিনের জুড়ি নেই। ক্যানসারের কারণে শরীরে অনেক সময় প্রচুর পানি চলে আসে, অ্যালবুমিন লস হওয়ার কারণে এই পানি আসে। সে কারণে আমরা ডিম থেকে অ্যালবুমিনের ঘাটতি পূরণ করতে পারি।
আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, যাঁদের নখের সুস্থতা কম এবং চুল পড়ে যায়, তাঁদের জন্য রয়েছে ডিমের সালফার। ডিমের সালফার গ্রহণ করেই একমাত্র চুলের সঠিক পরিচর্যা এবং নখের সুস্থতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। যাঁদের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি রয়েছে, ভিটামিন ডি-র ঘাটতি রয়েছে, প্রতিদিন একটি ডিম খেয়ে এই ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-র চাহিদা পূরণ করতে পারি। এটি আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সহায়তা করে। হাড়ের গঠন ও দাঁতের সুস্থতায় ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-র জুড়ি নেই।
ডিম এমন একটি খাবার, যা আমাদের শরীরে সম্পূর্ণভাবে ডাইজেস্ট হয় এবং অনেক ধরনের রোগ-জীবাণু থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। ডিম খাওয়ার পরে একজন মানুষ তিন ঘণ্টা কোনো কিছু না খেয়েও থাকতে পারেন। কারণ, ডিম পরিপূর্ণ আদর্শ খাবার, যাতে রয়েছে ভিটামিনস, মিনারেলস, কার্বোহাইড্রেট এবং পর্যাপ্ত ফ্যাট। ডিমের ফ্যাট নিয়ে অনেকে সবচেয়ে বেশি ভয়ে থাকেন। সব ফ্যাটই কিন্তু খারাপ নয়। ডিমে যতটুকু ফ্যাট আছে, তা আমাদের জন্য যথেষ্ট উপকারী এবং এটি আমাদের কোলেস্টেরল লেভেলকে লোয়ার হতে সাহায্য করে। যদি আমরা অন্য কোনো বাজে ফ্যাট জাতীয় খাবার গ্রহণ না করে থাকি, তাহলে ডিমের ফ্যাট আমাদের সব সময় কার্যকর উপাদান।
পুষ্টিবিদ আয়েশা সিদ্দিকা আরো বলেন, অনেকে মনে করেন, যাঁরা হার্টের রোগী, তাঁরা ডিম খেতেই পারবেন না, তাঁরা শুধু ডিমের সাদা অংশটুকু খাবেন। ডিমের সাদা অংশটুকু এবং কুসুম মিলিয়ে মোট ৭ গ্রাম মতো প্রোটিন রয়েছে। এতটুকু প্রোটিন থেকে যদি আমরা কুসুম বাদ দিয়ে দিই, তাহলে আমরা শুধু ৪ গ্রাম প্রোটিন পাব। আমি মনে করি, পুরো একটি ডিম খেয়ে আমাদের ৭ গ্রাম প্রোটিন নেওয়াই উপযুক্ত। এই ৭ গ্রাম প্রোটিনই শরীরকে যথেষ্ট পরিমাণে সাপোর্ট দিতে পারে। ডিমে রয়েছে ভিটামিন বি১২, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ডি। ভিটামিন এ আমাদের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। ভিটামিন এ-র জন্য আমরা কুসুম খাব।