কাঁধের ব্যথায় ভুগছেন?
ফ্রোজেন শোল্ডার বা কাঁধের ব্যথায় ভুগছেন, এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক এক আয়োজনে ফ্রোজেন শোল্ডার কী, এর উপসর্গ ও নিরাময়ে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন ডা. আব্দুল্লাহ আল মারুফ।
ফ্রোজেন শোল্ডার কী
ডা. আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ফ্রোজেন ইংরেজি শব্দ। শব্দটি ফ্রিজ থেকে এসেছে। ফ্রিজ মানে হিমায়িত হওয়া বা জমাট বাঁধা। আর শোল্ডার মানে কাঁধ। আমাদের কাঁধ যখন হিমায়িত হয়ে যায় বা শক্ত হয়ে যায় বা জমাট বেঁধে যায়, তখন তাকে ফ্রোজেন শোল্ডার বলে। শোল্ডার হলো একটি জয়েন্ট। সব জয়েন্টের উল্লেখযোগ্য রোল হচ্ছে, মুভমেন্ট করা। ফ্রোজেন শোল্ডারে যেটা হয়, একসময় জয়েন্ট ফ্রিজ হয়ে যায়, নাড়াচাড়া করতে পারে না এবং এর সাথে ব্যথা হয়।
কাঁধের ব্যথায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা
ডা. আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, এটা মোস্টলি ক্লিনিক্যালি ডায়াগনসিস করি আমরা। এটার জন্য আসলে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন নেই। আমাদের কাছে যদি ক্লিনিক্যালি মনে হয় এটা ফ্রোজেন শোল্ডার, সে ক্ষেত্রে আমরা হয়তো বা আদার্স প্যাথলজিকে এক্সক্লুড করার জন্য, তার বোনে কোনো লেশন (ক্ষত বা আঘাত) আছে কি না, তার ওখানে কোনো ফ্র্যাকচার আছে কি না, তার ট্রমাটিক আদার্স কোনো লেশন আছে কি না, ওইটা দেখার জন্য অনেক সময় আমরা এক্সরে করে থাকি। অনেক সময় এক্সরেতে আমরা নরমাল পাই, যদি তার ফ্রোজেন শোল্ডার হয়ে থাকে। অনেকে এমআরআই করে, সিটিস্ক্যান করে অথবা আলট্রাসাউন্ড করা হয়। এখানে প্যাথলজি যেটা পাই আমরা, জয়েন্টের যে ক্যাপসুলটা, ক্যাপসুলটা আসলে হাইপারট্রফিক হয়ে যায়, মোটা হয়ে যায়, থিকেনড হয়ে যায়। এখানে ফাইব্রোব্লাস্টিক কিছু চেঞ্জ হয়। ফাইব্রোব্লাস্টিক চেঞ্জের কারণ হচ্ছে, ফাইব্রাস টিস্যু যখন অ্যাডেশন হয়ে যায় জয়েন্টের মধ্যে বা ক্যাপসুলের মধ্যে, তখন জয়েন্টের স্পেস যেটা থাকার কথা, সেটা ন্যারো হয়ে যায়। স্পেস ন্যারো হওয়ার কারণে ব্যথা হচ্ছে এবং জয়েন্টের মুভমেন্ট কমে যাচ্ছে। এটাই তার মেইন প্যাথলজি।
কাঁধের ব্যথায় চিকিৎসা
ডা. আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ফ্রোজেন শোল্ডার আমাদের দেশে খুবই কমন একটা রোগ। এটা নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। রোগীদের আমরা রি-অ্যাসুরেন্স কাউন্সেলিং করি। সাধারণত যেটা বলি আমরা, আপনার এই রোগটা ছয় মাস থেকে ১৮ মাস পর্যন্ত সময় থাকতে পারে। এর পর এটা সেলফ রেজুলেশন হয়ে যায় কোনো ওষুধ ছাড়াই। এটা আমরা রোগীদের বলে প্রথমেই আশ্বস্ত করি। এর পর যেটা করি, যাদের উপসর্গ আছে, ব্যথা আছে, নাড়াচাড়া করতে পারে না... একটি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ হচ্ছে, রোগী তার হাত ভাঁজ করে পেছনের দিকে নিতে পারে না। হাত দিয়ে পিঠ চুলকাতে পারে না, অনেক সময় চুল আঁচড়াতে পারে না, হাত ওপরের দিকে তুলতে পারে না। রোগীদের আমরা বলি, এটি আপনা-আপনি ভালো হয়ে যায়। রোগীদের ব্যথানাশক ওষুধ দিয়ে থাকি। এর পর আমরা রোগীদের কিছু ব্যায়াম শিখিয়ে দিই। এটা আসলে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু এক্সারসাইজ করে রোগীর ৮০ শতাংশ ফ্রোজেন শোল্ডার ভালো হয়ে যেতে পারে। ওষুধের পাশাপাশি অবশ্যই ফিজিওথেরাপি নিতে হবে। বাসায় বসে সেলফ এক্সারসাইজ করতে হবে।
ফ্রোজেন শোল্ডার কী, এর উপসর্গ ও নিরাময়ে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওতে ক্লিক করুন।