কারা বেশি করোনা ঝুঁকিতে?
বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আলোচিত বিষয় হলো করোনাভাইরাস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। যদিও তা নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় রয়েছে। তবে এই ভাইরাস নিয়ে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই করোনার ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে এবং জানতে হবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য। জেনে নিন, করোনাভাইরাস নিয়ে কিছু তথ্য—
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ৩৭০৮তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. জাহাঙ্গীর আলম। বর্তমানে তিনি স্কয়ার হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ও পরামর্শক।
প্রশ্ন : করোনাভাইরাস কী?
উত্তর : করোনাভাইরাস একটি ফ্যামিলির নাম। আরএনএ (RNA) ভাইরাসের ফ্যামিলি। এতে অনেকগুলো ভাইরাস থাকে। এর স্থায়িত্ব অনেক বেশি। এগুলোকে সাধারণত জোনোটিক বলা হয়। এগুলো প্রাণীদেহ থেকে আসে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর নাম দেয় সার্চ কোভ টু। এই ভাইরাসের ফলে যে রোগটি হয় সেটি হলো কোভিড-নাইনটিন, কোভিড করোনাভাইরাস নাইনটিন ডিজিজ। এখানে ডিজিজটার নাম হলো কোভিড। আর ভাইরাসের নাম সার্চ কোভ টু।
প্রশ্ন : এই ভাইরাসটি কোন ধরনের এবং কেমন তাপমাত্রা/ আবহাওয়ায় বংশবিস্তার করে?
উত্তর : এই ভাইরাসের উৎপত্তি জোনোটিক গ্রুপ থেকে। অর্থাৎ এই ভাইরাস প্রাণীদেহ থেকে এসেছে। তবে নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না, কোন প্রাণী থেকে এসেছে। কেউ বলছেন বাদুড় থেকে, কেউ বলেছেন সাপ থেকে। তবে এটি একটি আরএনএ (RNA) ভাইরাস।
প্রশ্ন : যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, তাদের কী কী লক্ষণ থাকে এবং এর প্রাথমিক ও জটিল অবস্থা কেমন হয়?
উত্তর : করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হলো, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, জ্বর ও কাশি। জটিল আকার নিলে নিউমোনিয়া হয়ে যেতে পারে। তবে যাদের ডায়াবেটিস, হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে, এ ধরনের রোগীগুলো সাধারণ মারা যাচ্ছে। তাদের মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। এ ছাড়া সর্দি-জ্বর অথবা নিউমোনিয়া পর্যন্ত থেকেই ভালো হয়ে যেতে পারে।
প্রশ্ন : করোনাভাইরাসের আক্রান্তের মেয়াদকাল কত দিন?
উত্তর : এটি সাধারণত একদিন থেকে সাড়ে ১২ দিন পর্যন্ত থাকে। তবে গড়ে এটি পাঁচ থেকে ছয় দিন থাকে। তবে বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এটি ১৪ দিনের বেশি স্থায়ী হতে পারে। কেউ আক্রান্ত হলে পাঁচ থেকে ছয় দিন পর তার জ্বর আসবে এবং অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেবে।
প্রশ্ন : কীভাবে করোনাভাইরাস ছড়াচ্ছে?
উত্তর : শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। সাধারণ ফ্লু বা ঠাণ্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে। আক্রান্ত রোগীর মুখের লালা বা হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। আক্রান্ত রোগী থেকে এই ভাইরাস দুই মিটার পর্যন্ত যেতে পারে। এর বেশি পারে না।
প্রশ্ন : বেশি বিপদে বা ঝুঁকিতে আছেন কারা বা কাদের এটি হওয়ার আশঙ্কা বেশি?
উত্তর : আশঙ্কা সবারই আছে। যে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে যারা ডায়াবেটিস বা হার্টের রোগী, তাদের জন্য এটি বেশি বিপজ্জনক।
প্রশ্ন : মাস্ক আমরা কেন ব্যবহার করছি? এর প্রয়োজনীয়তা কী?
উত্তর : আক্রান্ত রোগীর ভাইরাস প্রথমত হাতের মাধ্যমে ছড়ায়। হাত যদি চোখ-মুখে যায়, তখন এই ভাইরাস দেহে প্রবেশ করবে। তাই নিয়মিত হাত ধুতে হবে। যখন হাঁচি দেবেন, তখন টিস্যু ব্যবহার করতে পারেন। আর ওয়ানটাইম মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। তবে মাস্ক ভালোভাবে মুখের সঙ্গে চেপে পরতে হবে।
প্রশ্ন : কোন ধরনের মাস্ক ব্যবহার করবে?
উত্তর : যেকোনো মাস্ক ব্যবহার করতে পারবে, তবে তা একবারের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। ব্যবহারের পর পেছন থেকে ধরে খুলে ফেলে দেওয়া উচিত।