কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়, গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায় পেঁপে
পেঁপে এমন একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার, যা কাঁচা ও পাকা খাওয়া যায়। কাঁচা পেঁপে আমরা সালাদ হিসেবে খেতে পারি। পেঁপে সহজলভ্য। সারা বছরই বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। আজ আমরা একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে পেঁপের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে পেঁপের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বলেছেন পুষ্টিবিদ নুজহাত মঞ্জুর।
পুষ্টিবিদ নুজহাত মঞ্জুর বলেন, পেঁপেতে পাপাইন নামের এক ধরনের এনজাইম আছে, যা আমাদের হজমে সহায়তা করে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের মাংসকে নরম করতে সহায়তা করে। পেঁপে ভিটামিন এ, সি ও ই সমৃদ্ধ। বিটা ক্যারোটিন থাকায় পেঁপে আমাদের অ্যাজমা প্রতিরোধে সহায়তা করে। তাছাড়া কোলন ক্যানসার, প্রোস্টেট ক্যানসারের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
নুজহাত মঞ্জুর জানান, পেঁপে প্রচুর আঁশ ও ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ। তাই যাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, তাঁরা অনায়াসে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পেঁপে খেতে পারেন। গর্ভাবস্থায় অনেকেরই কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। ফলে আমরা পেঁপে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকি। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন, প্রেগন্যান্সিতে পেঁপে অবশ্যই ভালো পাকা হতে হবে। কারণ, কাঁচা পেঁপে বা আধা পাকা পেঁপেতে লেটেক্স নামক একটি উপাদান থাকে, যা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে থাকে। এ সময় অবশ্যই কাঁচা পেঁপে সালাদ হিসেবে খাবেন না। তবে তরকারিতে খাওয়া যাবে। ইনফার্টিলিটি বা আইভিএফ রোগীদের ক্ষেত্রে আমরা বিশেষ সতর্কতার জন্য পুরো প্রেগন্যান্সিতেই পেঁপে না খাওয়ার পরামর্শ দিই। তাছাড়া শরীরের কোনও জায়গায় যদি পোড়া ক্ষত থাকে, সেখানে পেঁপে লাগালে ইনফেকশন অনেকাংশে কমে যাবে।
নুজহাত মঞ্জুর যুক্ত করেন, বাড়তি ক্যালোরির জন্য বা যাঁরা ওজন বাড়াতে চান, তাঁরা পেঁপের জুস খেতে পারেন। চাইলে পেঁপের জুসের সাথে দুধ ও সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। শারীরিক অসুস্থতা থেকে ওঠার পরে অথবা দুর্বলতা কাটানোর জন্য পেঁপের জুস খেতে পারেন। আর ডায়াবেটিক পেশেন্টরা অনায়াসে এক কাপ পেঁপে খেতে পারেন। অন্য ফলের তুলনায় পেঁপেতে সুগারের পরিমাণ কম থাকে। এক কাপ পেঁপে থেকে আমরা ৮ থেকে ৮.৩ গ্রাম পর্যন্ত সুগার পেয়ে থাকি।
এ পুষ্টিবিদ আরও বলেন, কিডনি পেশেন্টদের জন্য আমি বলব, অনেকের ধারণা আছে কিডনি পেশেন্টরা পেঁপে খেতে পারবেন না। এটা ভুল ধারণা। সব ক্ষেত্রেই যে খাওয়া যাবে না, তা কিন্তু ঠিক নয়। অবশ্যই খাওয়া যাবে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে। আর ক্রনিক কিডনি পেশেন্টদের অবস্থাটা যখন শেষ পর্যায়ে চলে আসে, মানে যখন এন্ড স্টেজ রেনাল ডিজিজ ধরা পড়ে এবং পটাসিয়ামের পরিমাণ যখন অনেক বেশি থাকে, তখন অবশ্যই আমরা পেঁপে খেতে নিষেধ করে থাকি। কারণ, পেঁপে যথেষ্ট পরিমাণে পটাসিয়াম সমৃদ্ধ।
পেঁপের পুষ্টিগুণ, কারা খেতে পারবেন আর কারা পারবেন না, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন।