প্রবীণদের যত্নে জরুরি পরামর্শ
প্রবীণরা সমাজের সম্পদ। ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত রোগ প্রবীণদের দেহে সহজে বাসা বাঁধে। প্রবীণদের যত্নে তাই বাড়তি সচেতনতা জরুরি।
প্রবীণদের যত্নের বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মাওলানা মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বাংলাদেশ ইউএস পিপলস হসপিটালের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৬৫১তম পর্বে সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়।
প্রশ্ন : প্রবীণদের স্বাস্থ্যসেবা বলতে আসলে কোন বিষয়গুলো বোঝায়?
উত্তর : কেউ যদি জেরিয়াটিক বিষয় সম্পর্কে না পড়েন, তাহলে এটি তাঁদের জন্য ব্যাখ্যা করা কঠিন। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে রোগ অনুযায়ী কতখানি ডোজ দিতে হবে, এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। বেশি হয়ে গেলে কিডনির ওপর চাপ পড়বে। ৪০ বছর বয়স হলে প্রোস্টেট স্বাস্থ্যের কী অবস্থা, দেখতে হবে। ব্যক্তির কোনো শারীরিক সমস্যা রয়েছে কি না, দেখতে হবে। ৪০ থেকে ৫০ বছরের মাঝখানে নিয়মিত কলোনোস্কোপি করতে হবে। বয়স বাড়লে পুরুষের প্রস্রাবের অনেক সমস্যা হতে দেখা যায়। কিডনির কার্যক্রমে সমস্যা হলে ঠিক করতে হবে। সোডিয়াম, পটাশিয়াম ঠিকমতো রয়েছে কি না, দেখতে হবে।
বেশির ভাগ মানুষেরই ব্যথা হয়। আর্থ্রাইটিস এ সময়ের খুব প্রচলিত বিষয়। আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে অনেক সময় একটি ইনজেকশন দিলে ভালো হয়ে যায়। ব্যথানাশক ওষুধ প্রবীণদের দেওয়ার সময় একটু চিন্তা করতে হবে। তিন মাস পর পর ফলোআপ করতে হবে।
সাদা ভাত আসলে বিষ। এতে অনেক সুগার থাকে। ডায়াবেটিস একজন রোগীকে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত করে দেয়। ডায়াবেটিসের ওষুধ মেটফরমিন থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। এটি কিডনির জন্য বিষাক্ত। এটি চালিয়ে গেলে কিডনির সমস্যা হতে পারে। ডায়াবেটিস, হৃদরোগ যাঁদের রয়েছে, তাঁদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে।
প্রশ্ন : শীতে অনেকের শ্বাসকষ্ট, ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা হয়। তাঁদের জন্য পরামর্শ কী?
উত্তর : তাঁদের যত্ন নিতে গেলে প্রচুর নার্সিং হোম করতে হবে। যাঁদের ঘরে চিকিৎসা দেওয়ার সুবিধা নেই, তাঁদের বাইরের সুবিধা দিতে হবে। একটি নার্সিং হোমে হয়তো ১০ জন মানুষ থাকল, তাঁরা জানেন কীভাবে প্রবীণদের চিকিৎসা দিতে হয়।
প্রশ্ন : প্রবীণদের যত্নে পরিবারের সদস্যদের আর কী কী বিষয় মাথায় রাখা জরুরি?
উত্তর : পরিবারের মানুষের সচেতন হতে হবে। তোমার দাদার এই অবস্থা হয়েছে, তোমার বাবারও এ অবস্থা হতে পারে। বিশেষ যত্ন না নিলে তো হবে না। প্রবীণ পুরুষের প্রোস্টেটে সমস্যা হয়। নারীদের প্রস্রাবে সমস্যা হয়। বাসায় এগুলোর যত্ন নেওয়া সব সময় সম্ভব হয় না। আরেকটি বিশেষ বিষয় হলো পুষ্টি। প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের সচেতন হতে হবে।
প্রশ্ন : প্রবীণদের ক্ষেত্রে হাঁটার গুরুত্ব কতখানি?
উত্তর : হাঁটাচলায় কারো নিষেধ নেই। হাঁটা সব রোগের চিকিৎসা। বিষণ্ণতারও চিকিৎসা হাঁটা। যে মানুষ হাঁটতে পারছে না, তাকে সাহায্য করতে হবে। ওয়াকার দিতে হবে। তবে যিনি প্যারালাইজড, তার তো হাঁটার প্রশ্ন আসে না।
প্রশ্ন : প্রবীণদের জন্য পরামর্শ কী, তাঁদের পরিবারের প্রতি পরমর্শ কী?
উত্তর : পরিবারের মানুষকে শেখাতে হবে এবং প্রেরণা দিতে হবে। যাঁদের বাড়িতে প্রবীণ রয়েছেন, তাঁদের প্রশিক্ষণ দিল কীভাবে যত্ন নিতে হয়, শেখানো হলো। ছোট ভিডিও বা ডকুমেন্টারি দেখিয়ে দিল। চিকিৎসক বা নার্সরা এ কাজ করতে পারেন।