ফ্যাটি লিভার কেন হয়, জেনে নিন লক্ষণগুলো
অনেকেই ফ্যাটি লিভার রোগে ভুগছেন। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব ফ্যাটি লিভার কী, কেনই বা হয়।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে ফ্যাটি লিভার সম্পর্কে কথা বলেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ আবদুল্লাহেল কাফী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
ফ্যাটি লিভার বলতে কী বোঝায়, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ আবদুল্লাহেল কাফী বলেন, সভ্যতার অনুষঙ্গ হিসেবে আমরা অনেক কিছুই পেয়েছি। আমাদের যে ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি কম, আমাদের মেন্টাল অ্যাকটিভিটি বেশি, দুটোর কারণে যে জিনিসটা হয়, সেটা হচ্ছে—আমাদের শক্তিগুলো জমা থাকে, কাজে ব্যয় হয় না, এই জমাকৃত শক্তিটা, কী হিসেবে জমাকৃত? কার্বোহাইড্রেট হিসেবে জমা থাকার বেশি সুযোগ নেই, প্রোটিন হিসেবে জমা থাকার কম সুযোগ রয়েছে, বেশির ভাগ অতিরিক্ত অ্যানার্জি ফ্যাট বা চর্বি হিসেবে জমা থাকে। এই চর্বিটা ত্বকের নিচে, লিভারে, হার্টে, রক্তনালিতে; বিভিন্ন জায়গায় জমা হচ্ছে। জমা হয়ে যে ডিজিজগুলো হয়, হার্টের জন্য অ্যাথেরোসক্লেরোসিস, লিভারে ফ্যাটি লিভার ডিজিজ হয়। ফ্যাটি লিভার প্রথমে কোষগুলোতে জমা হয়, তার সেখানে জমতে জমতে একসময় ডিজিজে পরিণত হয়।
কখন শুধু ফ্যাটি লিভার বলব আর কখন ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বলব, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ আবদুল্লাহেল কাফী বলেন, যখন প্রাইমারি লেভেলে থাকে, কিছু ফ্যাট গ্লোবিউলস জমা হলো কোষের মধ্যে, এটি এখনও কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বিঘ্নিত করেনি, কোষকে ধ্বংস করছে না, এটা একধরনের টক্সিক্যান্ট হিসেবে কাজ করে। এই টক্সিক্যান্ট ম্যাটারিয়াল—সিগনিফিক্যান্ট অ্যামাউন্ট অব সেল ডেস্ট্রাকশন হয়। তখন আমাদের লিভার ডিজিজের মার্কার এসজিপিটি বা এএলটির মাত্রা বেড়ে যায়, লিভার ফাংশন যখন অল্টারড হয়, তখন আমরা বলব ফ্যাটি লিভার ডিজিজ।
প্রাথমিক পর্যায়ে কী কী লক্ষণ থাকে, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ আবদুল্লাহেল কাফী বলেন, ফ্যাটি লিভার যখন হয়, তখন আসলে কোনও লক্ষণ থাকে না। সাধারণত আমরা যেটা দেখে থাকি ওয়েট গেইন বা ওজন বেড়ে যাওয়া। দুই নম্বর হচ্ছে আমাদের অ্যাবডোমিনাল ওবেসিটি বা পেটটা বড় হয়ে গেল। পেটে চর্বি জমল বেশি, ওজনটা বাড়ল। এটাকে আমরা প্রাথমিক ইন্ডিকেটর হিসেবে ধরি। কিন্তু তেমন কোনও লক্ষণ থাকে না। যখন এটি ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ তৈরি করল, লিভার সেল ডেস্ট্রাকশন হওয়া শুরু করল, ড্যামেজ হওয়া শুরু হলো, তখন শরীরের মধ্যে গা ম্যাজম্যাজ ভাব বা দুর্বলতা, ক্লান্তি, অবসাদ লাগতে পারে। তা ছাড়া স্পেসিফিক লক্ষণ নেই। যখন ডিজিজ অ্যাডভান্স হবে, লিভার ফাইব্রোসিস হয়ে সিরোসিস হবে যখন, তখন নানা রকম অসুবিধা হতে পারে।
ফ্যাটি লিভার কী, কেন হয়, এর প্রতিকারই বা কী, এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটিতে ক্লিক করুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।