মাংসপেশির ব্যথা বা সন্ধিপ্রদাহে ভুগছেন?
অনেকে আর্থ্রাইটিস বা মাংসপেশির ব্যথায় কাতর। আজ আমরা একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে এ রোগ সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত এক স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠানে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ নাজিয়া আহমেদ। তিনি বলেন, আর্থ্রাইটিস একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ এবং এটি একটি জটিল রোগ। আসলে আর্থ্রাইটিস কী। আর্থ্রাইটিস হচ্ছে, যখন আমাদের মাংসপেশি বা সন্ধি বা অস্থিসন্ধিগুলোতে ব্যথা অনুভূত হয় বা যে প্রদাহ হয়, তখন ওই অবস্থাকে আমরা আর্থ্রাইটিস বলে থাকি।
আর্থ্রাইটিস কোন বয়সের মানুষের বেশি হয়? পুষ্টিবিদ নাজিয়া আহমেদ বলেন, আমরা সবাই জানি, আমরা বলে থাকি, আর্থ্রাইটিস বয়স্ক মানুষের হয়। কিন্তু বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে, মানে মানুষের যখন যৌবন শুরু হয়, তখন থেকে শুরু করে ৪০ বছরের মধ্যে আর্থ্রাইটিসের প্রভাবটা বেশি দেখা দেয়। আর্থ্রাইটিস মূলত তিন ধরনের হয়ে থাকে। প্রথম আর্থ্রাইটিসটা হচ্ছে, অস্টিও আর্থ্রাইটিস, দ্বিতীয়টা হচ্ছে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং তৃতীয়টা হচ্ছে গাউট।
প্রথমে আমরা জানব অস্টিও আর্থ্রাইটিস সম্পর্কে। পুষ্টিবিদ নাজিয়া আহমেদ বলেন, অস্টিও আর্থ্রাইটিস যেটা, সেটা সাধারণত বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায় এবং পুরুষের তুলনায় নারীরা এ ব্যথার যন্ত্রণায় বেশি ভোগে। অস্টিও আর্থ্রাইটিসের ফলে যেটা হয়, দেহের অস্থি আমাদের শরীরের হাড়ের ভেতরের যে সংযোগস্থানগুলো আছে, সেগুলোর কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন হয়। কাঠামোগত পরিবর্তনের কারণে যে ব্যথা অনুভূত হয়, সেটি বেসিক্যালি হচ্ছে অস্টিও আর্থ্রাইটিস। অস্টিও আর্থ্রাইটিস হয়ে থাকে যে কারণে, তার মধ্যে রয়েছে বংশগত। কারণ, যদি বংশে বা জেনেটিকসে এই জিনিসটা থেকে থাকে, সে ক্ষেত্রে অস্টিও আর্থ্রাইটিস হয়ে থাকে। দ্বিতীয় হচ্ছে যেটা, কার্টিলেজিয়র ব্রেকডাউন হতে পারে। সে কারণে অস্টিও আর্থ্রাইটিস হয়ে থাকে। এ ছাড়া যখন আমাদের রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং পাশাপাশি ভিটামিন, খনিজ উপাদানগুলোর পরিমাণে অভাব হয়, তখন অস্টিও আর্থ্রাইটিস দেখা যায়।
কীভাবে বুঝব অস্টিও আর্থ্রাইটিস হয়েছে? পুষ্টিবিদ নাজিয়া আহমেদ বলেন, কিছু কিছু লক্ষণ আছে, যেমন—হাত-পা ফুলে যাওয়া, তীব্র ব্যথা হওয়া এবং অনেক সময় কিছু কিছু অংশ থাকে, যেগুলো খুব জ্বালাময়ী ভাবে ব্যথা হচ্ছে এবং একটা সময় এমনও হতে পারে, অস্থির কাঠামোগত পরিবর্তন হয়ে বিকলাঙ্গ হয়ে যেতে পারে। কাজেই এটি হচ্ছে অস্টিও আর্থ্রাইটিসের পরিচয়।
দ্বিতীয় যেটি নিয়ে কথা বলব, সেটি হচ্ছে, রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস। এটি যে কারণে হয়, সেটি হচ্ছে, শিশুদের ক্ষেত্রে এটি বেশি হয়ে থাকে এবং নারীর তুলনায় পুরুষের বেশি রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস হয়ে থাকে। রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসে দীর্ঘদিন জ্বর থাকে। দীর্ঘদিন জ্বর থেকে যখন অস্থিসন্ধিগুলোতে ব্যথা অনুভূত হয়, তখন রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস দেখা দেয়। বিস্তারিত জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওতে ক্লিক করুন।