রক্তস্বল্পতা দূর করতে খান ড্রাগন ফল
ড্রাগন বিদেশি ফল হলেও এখন বাংলাদেশে চাষ হচ্ছে। এটি পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি ফল। ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকায় যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁরা খাদ্যতালিকায় এ ফলটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। আজ আমরা একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত এক স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠানে ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ সুরাইয়া নাজনীন তুলি। তিনি বলেন, ড্রাগন ফলে ভিটামিন সি-র পরিমাণ অনেক বেশি। প্রায় ২১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ড্রাগন ফলে যে ভিটামিন সি পাওয়া যায়, তা একটি কমলা ও তিনটি গাজরের চেয়ে বেশি ভিটামিন সি সরবরাহ করে। যে কারণে ভিটামিন সি-র চাহিদা পূরণ করার জন্য ড্রাগন ফল গ্রহণ করতে পারি। ভিটামিন সি-র কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে, ত্বক উজ্জ্বল হবে ও দাঁত সুন্দর থাকবে।
সুরাইয়া নাজনীন তুলি বলেন, ড্রাগন ফল হজমে সহায়তা করে। ড্রাগন ফলে প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৩ মিলিগ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়। এ কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং কোলনে বিভিন্ন রকম যে রোগের সৃষ্টি হয়, তা দূর করতে সহায়তা করে থাকে। ড্রাগন ফলে ১০০ গ্রামে ৮৭ শতাংশ জলীয় উপাদান থাকে, এর ফলে আমাদের শরীরকে আর্দ্র রাখতে সহায়তা করে। ড্রাগন ফলে রয়েছে ক্যারোটিন, যা টিউমারের বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে। ড্রাগন ফলে ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট নেই বললেই চলে। তাই আমরা এটি অনায়াসে গ্রহণ করতে পারি।
এ পুষ্টিবিদ বলেন, ড্রাগন ফলে রয়েছে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং বয়সের ছাপ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল ও দীপ্ত করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে লাইকোপিন গ্রহণ করলে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। তাই স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি এড়াতে প্রতিদিন একটি ড্রাগন ফল গ্রহণ করতে পারি। এ ছাড়া ড্রাগন ফলে রয়েছে উচ্চমাত্রায় আয়রন, যা আমাদের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সক্ষম। যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছে, তারা যদি প্রতিদিন একটি ড্রাগন ফল গ্রহণ করে, তাহলে তারা এনিমিয়া থেকে অনেকাংশে দূরে থাকতে পারবে।
পুষ্টিবিদ সুরাইয়া নাজনীন তুলি আরো বলেন, ড্রাগন ফলে রয়েছে পটাশিয়াম, যা আমাদের উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে হৃদযন্ত্রকে রাখে সুস্থ। ড্রাগন ফল খারাপ কোলেস্টেরলকে দূর করে শরীরকে সুস্থ রাখে এবং ভালো কোলেস্টেরলকে উন্নত করে। ড্রাগন ফলে যেহেতু কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাটের পরিমাণ কম, তাই ডায়াবেটিস রোগীরা অনায়াসে এটি গ্রহণ করতে পারে। এতে কোনোরকম সুগার লেভেল ফল করবে না। আর ড্রাগন ফলে যেহেতু ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম রয়েছে, তাই এটি দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়রোধে সহায়তা করে। ড্রাগন ফলে প্রচুর জলীয় অংশ থাকায় এটি গ্রহণ করে সুস্থ ও সজীব থাকা যায়।