হার্ট অ্যাটাক : কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
হার্ট অ্যাটাকের কারণে বুকে ব্যথা হয়। আবার সব বুকে ব্যথাই হার্ট অ্যাটাক নয়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৫৯৮তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মো. শাহাবুদ্দিন খান। বর্তমানে তিনি আল হেলাল স্পেশালাইজড হাসপাতালের মেডিসিন ও হৃদরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : হার্ট অ্যাটাক বুঝলে কখন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে?
উত্তর : আমাদের দেশের অধিকাংশ লোক গ্রামে বাস করে। যদি কারো হার্ট অ্যাটাকের কারণে বুকে ব্যথা হয়, যদি আপনার কখনো পেট থেকে রক্তক্ষরণ না হয়ে থাকে বা অ্যাসপিরিনে কোনো অ্যালার্জি না থাকে, ৩০০ মিলিগ্রাম অ্যাসপিরিন, ৩০০ মিলিগ্রাম কোপিডোগ্রেল সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে নেওয়া উচিত।
এরপর দ্রুত ধারেকাছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে যাওয়া উচিত, যেখানে ইসিজি, সিকেএমবি, ট্রোপোনিন করা হয়। সারা দেশের সব জায়গায় হচ্ছে এ পরীক্ষা। তাহলে আধা ঘণ্টার মধ্যেই কিন্তু আমরা নির্ণয় করে ফেলতে পারি যে এই বুকের ব্যথাটা কি হার্ট অ্যাটাকের কারণে হচ্ছে, নাকি অন্য কারণে? আমার শুধু তিনটি জিনিস দরকার। রোগীর চেস্ট পেইন, ইসিজি চেইঞ্জ, সিকেএমবি ও ট্রোপোনিন পরীক্ষা।
হার্ট অ্যাটাকে অবশ্যই রোগীকে সিসিইউতে যেতে হবে। যেখানে সে সব সময় একটি মনিটরিংয়ে থাকবে। ছয় থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে যদি আসতে পারে, আমরা এই রোগীকে একটি ইনজেকশন দিই, যাকে আমরা বলি থ্রোম্বোলাইটিক, যাতে জমাটবাঁধা রক্ত গলে যায়। ৬৫ ভাগ লোক তাতেই ভালো হয়ে যায়। কিন্তু যাদের ৩৫ ভাগ রক্তনালি খোলে না, আমাদের এটা বলে আর্লি ইন্টারভেনশন। যেসব বড় বড় হাসপাতালে অত্যন্ত অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন এবং ক্যাথল্যাব রয়েছে, একে বলে ডোর টু নিডেল এবং ডোর টু বেলো। আমি রোগীকে ক্যাথল্যাবে নিয়ে গেলাম, একটি এনজিওগ্রাম করলাম, এটা করতে তিন মিনিটের বেশি লাগে না। তার নালি ১০০ ভাগ বন্ধ হয়ে আছে। আমি একটি বেলুন দিয়ে খুলে একটি স্ট্যান করে দিই। পরের দিন বিকেলে সে চলে যেতে পারে। এর সুবিধাটাও সব জায়গায় নেই। যত জায়গাতেই আছে, প্রাথমিকভাবে এনজিওপ্লাস্টি করার সুযোগ খুব কম। কারণ, বেশির ভাগ হার্ট অ্যাটাকগুলো আসে রাত তিনটা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত।
আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলতে পারি গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে হৃদরোগ চিকিৎসায় পৃথিবীর যেকোনো দেশের সমকক্ষ আমরা বর্তমানে।

ফিচার ডেস্ক