কিডনি ভালো রাখতে চিনি ও লবণ কম খান
কিডনি ভালো রাখতে সঠিক খাবার নির্বাচনের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৬৭২তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন দুজন চিকিৎসক। একজন অধ্যাপক মো. হানিফ। বর্তমানে তিনি ঢাকা শিশু হাসপাতালে শিশু কিডনি বিভাগে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত। অপরজন অধ্যাপক হাবিবুর রহমান। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিশু কিডনি বিভাগে অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : কিডনিবান্ধব খাবার কোনগুলো?
অধ্যাপক মো. হানিফ : ভারসাম্যপূর্ণ খাবারের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আছে। কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা কত ভাগ খেতে হবে, প্রোটিন বা আমিষ কতটুকু খেতে হবে, চর্বি বা ফ্যাট জাতীয় খাবার কতটুকু খেতে হবে- এগুলো নির্দিষ্ট করা আছে। তবে স্বাভাবিক পারিবারিক খাবার যেগুলো আছে সেগুলো সাধারণত ভারসাম্যপূর্ণভাবেই থাকে। তবে কিডনি রোগীর জন্য আমাদের দুটো জিনিস খেয়াল রাখতে হবে। একটি হলো লবণ, আরেকটি হলো চিনি। চিনিকে এখন বিষ হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে। যখনই আপনি মিষ্টি জাতীয় জিনিস খাবেন সুগার জমা হবে চর্বি হিসেবে। সেই জিনিসটি আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। লবণ শরীরের উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম প্রধান কারণ।
আসলে স্থূলতা নিয়ে সমাজে বিপ্লব করতে হবে। আমাদের খেয়াল করতে হবে আমরা কী খাচ্ছি। এটি যদি খেয়াল না রাখি তাহলে সমস্যা হবে। অতিরিক্ত কোল্ড ড্রিংস যারা খায় তাদের কিন্তু হাড়ে ক্ষতি হয়, পাকস্থলীতে ক্ষতি হয়। পিএইচয়ের ভারসাম্য রক্ষা হয় না। আমি বলছিলাম কী স্থূলতার কারণে যে চর্বি শরীরে জমা হয় এটি কিডনির সরাসরি ক্ষতি করে। এর কারণে এক পাশে ব্লাড প্রেশার বাড়ছে। অন্য পাশে হার্টের অসুখ বাড়ছে। স্থূলতা কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস তিনটি বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। কারো উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কিডনি রোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
অধ্যাপক হাবিবুর রহমান : প্রোটিনের উৎসের ক্ষেত্রে মাংসের চেয়ে মাছের দিকে বেশি ঝুঁকতে হবে। ছোট মাছ আরো ভালো । পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছ খাওয়া যাবে। বাচ্চাকে কিছু ফল খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিতে হবে। সিম, কাঁচা বাদাম খেতে হবে। পাশাপাশি হাঁটা নিয়মিত করতে হবে। ফলমূল, মাছ সবজি এগুলোর প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রশ্ন : অনেকে কাঁচা লবণ খাওয়াকে খারাপ ভেবে তরকারিতে বেশি লবণ দেন। বিষয়টি কী সেরকম?
অধ্যাপক হাবিবুর রহমান : লবণের জন্য একটি নির্দিষ্ট মাপ আছে। এর বেশি খাওয়া যাবে না। এক টেবিল চামচ প্রতিদিন। অতিরিক্ত লবণ খেলে শরীর পানি ধরে রাখে। এতে শরীরের ব্লাড ভলিয়্যুম বেড়ে যায়। শরীরে উচ্চ রক্তচাপ হয়। সেই উচ্চ রক্তচাপ প্রকারান্তরে কিডনির গ্লুমারোলাসকে ধ্বংস করে দেবে।