অটিজম সম্পর্কে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

এটা চিরন্তন সত্য যে মানুষ হিসেবে আমরা বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হই। কিছু রোগ চিকিৎসা করে সারানো যায়, আবার কিছু রোগে আর কখনোই আরোগ্য লাভ হয় না। অটিজম সে ধরনেরই একটি রোগ।
আগে অটিজমকে একটি পরিবর্তনশীল রোগ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। রোগটি বাচ্চাদের শেখার ক্ষমতা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া এবং যোগাযোগের ক্ষমতার ব্যাপক ক্ষতি করে। অটিজম একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির মস্তিষ্ক, স্নায়বিক পদ্ধতি, জ্ঞান অর্জন ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে।
শিশু জন্মের সময় দেহে জিনের নির্দিষ্ট কিছু পরিবর্তনের ফলে জটিল এই মস্তিষ্কজনিত রোগটি হয়ে থাকে, যা চিকিৎসার মাধ্যমে সারানো সম্ভব নয়। অটিজমের প্রধান লক্ষণগুলো হচ্ছে ত্রুটিপূর্ণ সামাজিক আচরণ, জেদি স্বভাব, আগ্রাসন, শেখার অক্ষমতা, সমন্বয়হীনতা, উদাসীনতা, কথাবার্তা জড়িয়ে বা আটকে যাওয়া, ভয়ভীতি ইত্যাদি।
অটিস্টিক শিশুদের খেয়াল রাখা অভিভাবকদের জন্য অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ, অটিস্টিক শিশুদের আলাদা যত্নের প্রয়োজন হয়। চলুন, স্বাস্থ্য সাময়িকী বোল্ডস্কাইয়ের সৌজন্যে জেনে নিই অটিজম সম্পর্কিত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
ধারণা-১
পুরোনো রেকর্ড ও জরিপ অনুসারে বিশ্বে অটিজম ব্যাধিটি একটু ধীরগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার হার ১৯৮০ সালের তুলনায় ১০ গুণ বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, মা-বাবার অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা, পরিবেশগত পরিবর্তন ইত্যাদি অটিজমের প্রধান কারণ।
ধারণা-২
কয়েক শতাব্দী আগে লোকজনের অটিজম সম্পর্কে অতটা জ্ঞান ছিল না। তাই তারা বিশ্বাস করত, অটিজম কোনো রোগ নয়; বরং এটা তাদের মা-বাবার পাপের ফল, যা ভোগ করতে হয় বাচ্চাদের। তবে বর্তমানে অধিকাংশ লোকজনই জানে, অটিজম একটি মারাত্মক জিনঘটিত ব্যাধি।
ধারণা-৩
অনেক ব্যক্তিই এ ধারণা পোষণ করেন যে অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তি কখনই স্বাভাবিকভাবে তাদের জীবনযাপন করতে পারে না। কিন্তু আসলে তা সম্পূর্ণ বিপরীত। অটিজমের মাত্রা ও চিকিৎসার ওপর নির্ভর করে একজন অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তি কতটুকু স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন। এমনকি অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব রয়েছেন, যাঁরা অটিজমে আক্রান্ত ছিলেন। এ ছাড়া এমন অনেক লেখক, অভিনেতা ও চিত্রশিল্পীও রয়েছেন, যাঁদের অটিজম রয়েছে।