ডায়াবেটিসের রোগীদের চোখে সমস্যা প্রতিরোধে করণীয়

ডায়াবেটিস হলে অনেক সময় চোখ আক্রান্ত হয়। চোখে বিভিন্ন রোগ হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঝুঁকি বাড়ে। এ ধরনের ঝুঁকি প্রতিরোধে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৯৮তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মো. মোস্তাক আহমেদ। বর্তমানে তিনি কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজে চক্ষুবিজ্ঞান বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষ যদি তার চোখকে সুস্থ রাখতে চায়, কী করতে হবে?
উত্তর : রোগীকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। নিয়ন্ত্রণে রাখলে ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে অথবা একটু দেরিতে হয়। সাধারণত আমরা বলি কারো যদি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস থাকে, ১০ বছর ধরে ডায়াবেটিস থাকে, তার ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। আর ১০ বছরের আগেও ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি হতে পারে, যদি সেটি অনিয়ন্ত্রিত থাকে। আমরা বলি ডায়াবেটিস রোগীদের সুস্থ থাকার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
এক নম্বর হলো, ব্যায়াম করা। নিয়মিত ব্যায়াম করা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রধান শর্ত। দ্বিতীয়ত হলো, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, ডায়েট করতে হবে। তিন নম্বর হলো, ওষুধ নেওয়া, সেটা ইনসুলিন হোক অথবা ট্যাবলেটের মাধ্যমেই হোক। কেউ যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে, তাহলে ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা কম; হলেও দেরিতে হবে। এই হচ্ছে একটি দিক। আরেকটি দিক হচ্ছে তাকে নিয়মিত ফলোআপ করতে হবে। যদি তার ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি হয়ে না থাকে, তাহলে বছরে একবার চক্ষু বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের আমরা বলি যে যদি রেটিনোপ্যাথি না হয়, তাহলে বছরে অন্তত একবার চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ দিয়ে চোখ পরীক্ষা করাতে হবে। আর যদি তার ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি থাকে, সে ক্ষেত্রে তার ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি কোন পর্যায়ে রয়েছে, সেটির ওপর নির্ভর করে চক্ষু বিশেষজ্ঞ তাকে বলবেন, কত মাস পরে আসতে হবে।
মূল বিষয়টি হলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দ্বিতীয় জিনিস হলো যে নিয়মিত ফলোআপ করতে হবে। চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে। ফলোআপ করে যদি দেখা যায় যে তার ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি রয়েছে, সে ক্ষেত্রে আমরা কিছু পরীক্ষা করি। দেখি রেটিনোপ্যাথিটা কোন পর্যায়ে রয়েছে। কোথাও কোনো রক্তপাত হচ্ছে কি না। এখন অনেক আধুনিক পরীক্ষা এসেছে। ওসিটি বলা হয়। ওসিটি করে আমরা দেখি মেকুলাতে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। এর কারণ হলো মেকুলাতে যদি কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে রোগী হঠাৎ দৃষ্টি হারিয়ে ফেলতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমরা যদি রোগ নির্ণয় করতে পারি ওসিটির মাধ্যমে, তাহলে সেটির চিকিৎসা রয়েছে।