রাতে গাড়ি চালানোর সময় যে ৫ বিষয় মাথায় রাখবেন?

অনেকে গাড়ি চালাতে ভালোবাসেন। অফিস কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি পেলেই বেরিয়ে পড়েন প্রিয় কোনো জায়গায়। দিনের বেলা পরিচিত রাস্তা হলে এক রকম, কিন্তু রাতে গাড়ি চালাতে অনেকে ভয় পান। বিশেষ করে উল্টো দিক থেকে আসা উঁচু যানগুলো থেকে বিচ্ছুরিত আলোকরশ্মিকে। সেই আলো এমনভাবে চোখে এসে প্রতিফলিত হয় যে, একেবারে বিভ্রান্ত লেগে যাওয়ার উপায়। হাতে গাড়ির স্টিয়ারিং নিয়ে ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলবেন, তা-ও সম্ভব নয়।
রাস্তার অবস্থা, সামনে-পিছনে বা দু’পাশের গাড়ির সঙ্গে দূরত্ব কিংবা তাদের গতিবিধি, বিশেষ কোনও সঙ্কেত চোখের অনুমানে বুঝতে না পারলে রাতে গাড়ি চালানো মুশকিল। চোখের এই ধরনের জটিলতাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘অ্যাজটিগমাটিজম’ বলা হয়। কর্নিয়া বা চোখের লেন্সের আকার সামান্য বিকৃত হলে কোনো একটি নির্দিষ্ট বস্তু বা দিকের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করা যায় না। ফলে উল্টো দিকে থাকা বস্তুটিকে ঝাপসা দেখায়। এমন অবস্থায় অবশ্যই জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, গাড়ি চালাতে গেলে প্রতিটি ইন্দ্রিয়কে সজাগ রাখতে হয়। চোখের এই ধরনের সমস্যা থাকলে রাতে গাড়ি না চালানোই ভালো। তবে একান্ত যদি চালাতেই হয়, সেক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন।
– গাড়ির সামনের কাচ পরিষ্কার রাখতে হবে। গাড়ির জানালার দু’পাশে এবং মাথার উপরে আয়না ওপর ধুলো জমে থাকলেও পিছন থেকে আসা গাড়ির গতিবিধি অনুমান করতে সমস্যা হতে পারে।
– চোখের সুবিধা-অসুবিধা বুঝে গাড়ির হেডলাইটের অবস্থান ঠিক করে নিতে হবে। এক একজন চালকের উচ্চতা এক এক রকম হয়। সেই বুঝে ঠিক কোথায় আলো ফেললে দেখতে অসুবিধা হবে না, তা ঠিক করে নেওয়া উচিত। উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ির আলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কখন আলো ‘আপার’ করতে হবে, আর কখন ‘ডিপার’, তা-ও বুঝে নেওয়া জরুরি।
– উল্টো দিক থেকে চোখের উপর তীব্র আলো এসে পড়লেও সমস্যা হতে পারে। তার জন্য ড্যাশবোর্ডের আলো যতটা সম্ভব কমিয়ে রাখতে হবে। উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ির আলোর দিকে সোজাসুজি তাকালে চোখ বিভ্রান্ত হয়ে যেতে পারে। রাতে গাড়ি চালানোর সময়ে এই সব বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
– দীর্ঘক্ষণ একভাবে গাড়ি চালালে চোখ ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে। তাই মাঝেমাঝে বিরতি নিয়ে চোখের ব্যায়াম করা যেতে পারে। ঘন ঘন চোখের পলক ফেললেও এই ধরনের সমস্যা অনেকটা এড়ানো যায়। হাতের কাছে ওয়েট টিস্যু রাখতে পারেন। চোখের উপর মিনিটখানেক তা রাখলেও ক্লান্তি দূর হয়। চোখের আর্দ্রতাও বজায় থাকে।
– রাতে গাড়ি চালানোর জন্য আলাদা করে চশমা কিনতে পাওয়া যায়। চোখের ‘পাওয়ার’ না থাকলেও প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তেমন চশমা পরা যেতে পারে। এই ধরনের চশমাগুলো উল্টো দিক থেকে আসা আলোর ঝলমলে হ্রাস করতে সহায়তা করে। ফলে চোখের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে না। চোখের ক্লান্তি কাটাতেও সাহায্য করে এই ধরনের চশমা।