ফিস্টুলার পরিচর্চা যেভাবে করবেন
ফিস্টুলা এক ধরনের সার্জারি। সাধারণত কিডনি ডায়ালাইসিসের রোগীদের ক্ষেত্রে এটি করতে হয়। ফিস্টুলা করার পর এর বিশেষ পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে।
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩০৭৬তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. সাকলায়েন রাসেল। বর্তমানে তিনি ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভাসকুলার সার্জারি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : ফিস্টুলার পরিচর্যা কীভাবে হতে পারে?
উত্তর : প্রথম কথা হলো অন্য যেকোনো সার্জনের চেয়ে আমরা ভাসকুলার সার্জনরা কিছু বিশেষ বিষয় খেয়াল করি। আমি সিঙ্গাপুরে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। ওদের যে প্রটোকল সেটা আসলে আমরা অনুসরণ করি। সেটি হচ্ছে, একজন রোগীকে যখন আমাদের কাছে পাঠানো হয়, প্রতিবার রোগীকে সম্পূর্ণ দেখি। তার পা হাতের কী অবস্থা, হাতের ভেইনগুলো কেমন রয়েছে, ভেইনগুলোর আকার দেখি, সেগুলোর সঙ্গে হার্টের সংযোগ কেমন সেগুলো দেখি। দেখে নেওয়ার পর পরিকল্পনা করি আমি কোন জায়গাটায় অস্ত্রোপচার করব। মানে অস্ত্রোপচারের আগের পরিকল্পনাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এরপর আমরা অস্ত্রোপচার করে দেই। এরপর রোগী যদি বাড়ি যায়, যাওয়ার পর আমরা তাকে বলি এটি হলো আপনার জীবনপথ। আপনার যত্ন করতে হবে। অন্তত ১২টা দিন রেড অ্যালার্ট। সেই রেড অ্যালার্টটা কী? যে হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে, সেই হাত চাপ দিয়ে ধরবেন না। আমরা সবসময় চাই প্রেশার কমুক। তবে এই ক্ষেত্রে আমরা চাই আপনার প্রেশার কিছুটা বাড়তি থাকুক। কারণ, প্রেশার কমে গেলে প্রবাহ কমে গিয়ে ওই জায়গাটা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই আমরা চাই এই কয়েকটা দিন অন্তত প্রেশারটা বেশি থাকুক। প্রেশার যদি কমে যায় সেই ক্ষেত্রে আমরা বলি যে আপনি সেদিন একটু স্যালাইন খেয়ে নিন। কিংবা আপনি একটু ডাবের পানি খেয়ে নিন। ওই দিনের যে প্রেশারের ওষুধটা খাচ্ছিলেন, সেটা বন্ধ রাখুন। তাহলে আপনার প্রেশার একটু বাড়বে। আর ডায়ালাইসিসের সময় খেয়াল রাখতে হবে, তার সেই জায়গাটার প্রেশার যাতে না কমে।
একই সঙ্গে যিনি নার্স, যিনি ছিদ্র করে ডায়ালাইসিস করছেন, তার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে যেন প্রতিদিন এক জায়গায় ছিদ্র করে ডায়ালাইসিসটা না করে। অনেকগুলো জায়গায় পাংচার করে করে সে যদি রোগীকে সেবা দেয়, আমার মনে হয় এটি অনেক ভালো হবে।
দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই, আমাদের দেশে যত্রতত্র এত বেশি এই ফিস্টুলা অস্ত্রোপচারগুলো করা হয়, যে রোগীর ক্ষতি হয়। সেই ক্ষেত্রে সঠিক জায়গায় রেফার করাটাই মনে হয় উপযুক্ত। আমরা আসলে এগিয়ে গেছি। এগিয়ে যাওয়ার যে গল্পগুলো এগুলো চিকিৎসকরা বেশি জানেন। আপনি আপনার রোগীকে কোথায় পাঠাবেন এটি আসলে আপনার নৈতিক দায়িত্ব। কারণ, ওই রোগীটা জানল না আপনি কার কাছে পাঠালেন। তবে ওপরে কিন্তু একজন বসে আছেন, তাকে কিন্তু একদিন আপনার হিসাব দিতে হবে।