ধুতুরার বিষক্রিয়ায় কী করবেন?
আমাদের দেশে একজনকে কৌশলে ধুতুরার বিচি খাইয়ে তার সর্বস্ব লুট করাটা বিরল ঘটনা নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে লঞ্চঘাট, রেলওয়ে স্টেশন কিংবা দীর্ঘ ভ্রমণে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। সাধারণত দুষ্কৃতকারী ব্যক্তি বন্ধু বা শুভাকাঙ্ক্ষী সেজে সিগারেট, পান বা চায়ে ধুতুরার বিচি গুঁড়া করে মিশিয়ে লোকটিকে অফার করে।
কখনো কখনো শিশুদের অপহরণের কাজেও ধুতুরার বিচি ব্যবহৃত হয়। ধুতুরার বিচি খাওয়ার পর তার স্নায়ুতন্ত্রের প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তার ঘাম ও লালা বন্ধ হয়ে যায়। রোগী অবসন্ন হয়ে পড়ে। বেশি মাত্রায় ধুতুরার বিচি খেলে রোগী গভীর ঘুমে তলিয়ে যায়। সাধারণত শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু ঘটে। ধুতুরার বিচি খাওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যেই সাধারণত উপসর্গগুলো প্রকাশ পায়। রোগী বমি করে, পেট জ্বালাপোড়া করে কিছু গিলতে অসুবিধা হয়, মাথা ঝিমঝিম করে, কথা বলতে অসুবিধা হয়, টলমলে হাঁটে, গলা-মুখ শুকিয়ে যায়, চোখ লাল হয়, সে অস্থির হয়ে পড়ে।
রোগী ধুতুরার বিচি খেয়েছে বোঝা গেলে কী করণীয় :
- রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে হবে।
- পটাশিয়াম পার ম্যাঙ্গানেটের দুর্বল দ্রবণ দিয়ে তার পাকস্থলী ধৌত করতে হবে।
- রোগীকে ভুলেও মরফিন দেওয়া যাবে না।
- রোগীর ত্বকের নিচে ০.৫ মিলিগ্রাম প্রোসটিগমিন ইনজেকশন দেওয়া যেতে পারে।
- রোগীর চিত্তবিভ্রম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বারবিচ্যুরেট দেওয়া যেতে পারে।
- রোগীকে উত্তেজক কিছু, যেমন—কফি খাওয়ানো যেতে পারে।
- প্রয়োজনে রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিতে হবে।
- অক্সিজেনের ব্যবস্থা থাকলে রোগীকে অক্সিজেন দিতে হবে।
- রোগীর শরীর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুছিয়ে দিতে হবে।
- রোগীকে পায়খানা করানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পায়খানা করানোর জন্য মলদ্বারের ভেতর মোটা সিরিঞ্জসহকারে সাবানপানি প্রয়োগ করা যেতে পারে।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।