পাকস্থলীর ক্যানসারের চিকিৎসা কী?
সাধারণত অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার, ফস্টফুড, প্রক্রিয়াজাতীয় খাবার ইত্যাদিকে পাকস্থলীর ক্যানসারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়। পাকস্থলীর ক্যানসারের ক্ষেত্রে সার্জারি, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি দিয়ে চিকিৎসা হয়ে থাকে।
পাকস্থলীর ক্যানসারের চিকিৎসার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৩৯৯তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. আরমান রেজা চৌধুরী রাকেশ। বর্তমানে তিনি ডেল্টা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অনকোলজি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : ক্যানসার হিসেবে ধরা পড়লে করণীয় কী?
উত্তর : যদি ক্যানসার ধরা পড়েই যায়, তখন পর্যায় নির্ধারণের জন্য কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। অর্থাৎ পাকস্থলীর মধ্যে ক্যানসার পাওয়া গেলে এটি আশপাশে কতটুকু ছড়িয়েছে কিংবা এটি দূরে কোথাও ছড়িয়ে গেছে কি না, সেই জিনিসগুলো দেখার জন্য কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। যেমন : পাকস্থলীর ক্যানসার লিভারে ছড়িয়ে যেতে পারে। লিভারের জন্য সম্পূর্ণ পেটের সিটি স্ক্যান করতে হবে। অন্তত আলট্রাসনোগ্রাম করে দেখতে হবে লিভারে ছড়িয়েছে কি না। এটা ফুসফুসে ছড়াতে পারে। ফুসফুসের জন্য বুকের এক্স-রে বা সিটিস্ক্যান করে দেখতে হবে। যেসব জায়গায় ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে, সেসব জায়গাকে বের করার জন্য এই পরীক্ষাগুলো করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ক্যানসারটা আসলে কোন পর্যায় রয়েছে। কারণ, এর ওপরই নির্ভর করবে আমরা কোন চিকিৎসায় যাব।
প্রশ্ন : কোন পর্যায়ে কী চিকিৎসা দিয়ে থাকেন?
উত্তর : অনেক সময় দেখা যায়, সার্জারি করার মতো যে অবস্থা সে অবস্থায় যায়নি। দেখা যায় যিনি রোগী, তিনি হয়তো অনেকদিন ধরেই জিনিসটা গোপন করে আসছিলেন। অনেকদিন ধরে ভুগছেন। এ কারণে রোগটা আসলে বাড়তে বাড়তে দেখা যায় অগ্রবর্তী পর্যায়ে চলে গেছে। তখন আমাদের রেডিওথেরাপি বা কেমোথেরাপির চিন্তা করতে হয়। অনেকগুলো বিষয় রয়েছে এ ক্ষেত্রে। নিউঅ্যাডজোভেন রেডিওথেরাপির সুযোগ না থাকলেও পাকস্থলীর ক্যানসারের ক্ষেত্রে নিউঅ্যাডজোভেন কেমোথেরাপি করি। সার্জন যাতে সার্জারিটা ভালোমতো করতে পারে, এর জন্য আমরা আগে থেকেই কেমোথেরাপি দিয়ে দিই। কিছু কেমোথেরাপি দিয়ে দিলে দেখা যায় কিছু বিষয় ছোট হয়ে আসে। আশপাশের স্ট্রাকচারগুলো অনেকটা ফ্রি হয়ে আসে। এতে সার্জন খুব ভালোভাবে সার্জারিটা করতে পারে। এর পরে কিন্তু আবার কেমোথেরাপি দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, এটি একটি গাইডলাইন।
অনেক সময় দেখা যায়, রোগীরা হয়তো মোটামুটি এগিয়ে রয়েছে, সার্জারি করেই এসেছে। এরও একটি গাইডলাইন রয়েছে। এই রোগীগুলোকে আগেই হয়তো একটা-দুটো কেমোথেরাপি দেওয়ার পর রেডিয়েশন দেওয়া হয়। পরে আবারও আরো কিছু কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। এভাবে চিকিৎসাগুলোকে শেষ করা হয়।
প্রশ্ন : অনেক সময় রোগীকে হয়তো কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি সবই দেওয়া হয়। এটি কেন?
উত্তর : অনেকে ভাবেন, কেমোথেরাপি দেওয়া হচ্ছে, এর মানে এটি বোধ হয় অনেক অগ্রবর্তী পর্যায়ে চলে গেছে। বৈজ্ঞানিকভাবে হয়তো বিষয়টি সে রকম নয়। এটি দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো যে রোগটি যেন আর ফিরে না আসে।
আমাদের উদ্দেশ্য কী? রোগটি যেন আর ফিরে না আসে এর জন্য কাজ করা। আর সেটাই করা হয়।