অ্যাজমার চিকিৎসা কী?
অ্যাজমা কখনো কখনো মৃত্যুর কারণও হতে পারে। অ্যাজমা নিরাময় করা সম্ভব না হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তাই সঠিক চিকিৎসা জরুরি।
এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিনের ২৩৬৪তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. রফিক আহমেদ। বর্তমানে তিনি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বক্ষব্যাধি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন।
প্রশ্ন : অ্যাজমার চিকিৎসা কীভাবে করেন?
উত্তর : চিকিৎসাকে আসলে তিনটি ভাগ করা হয়েছে। যেমন : রিলিফার, প্রিভেন্টার, প্রোটেক্টর। রিলিফার হলো সালবিউটামল। এর সাথে আরো কিছু ওষুধ রয়েছে, সেগুলো দেওয়া হয়। ইনহেলার, সালবিউটামল ইনহেলার ব্যবহার করা হলো শ্বাসকষ্ট চলে গেল।
প্রশ্ন : ইনহেলারের ক্ষেত্রে অনেকের ভয় কাজ করে । নিতে চায় না। তখন আপনারা রোগীকে কীভাবে বোঝান?
উত্তর : আমরা রোগীকে বলি সব ওষুধের মধ্যে ইনহেলার হলো প্রথম পছন্দ। সালবিউটামল চার এমজি ট্যাবলেট দেওয়া মানে, চার হাজার মাইক্রোগ্রাম ট্যাবলেট দিচ্ছি। এর বদলে যদি ইনহেলার দেই, সেটা ২০০ মাইক্রোগ্রাম। ইনহেলারে কাজ ভালো হয়। ব্রঙ্কডাইলেটর ওরাল ট্যাবলেট খায় তার পালপিটিশন (ধরফর) শুরু হবে। এমনিতেই তো অ্যাজমা রোগীদের বুক ধরফরের সমস্যা থাকে, এটা আরো বাড়ে। আমরা সবসময় তাদের ইনহেলার গ্রহণের পরামর্শ দেই। এটা হলো রিলিফার।
আরেকটি হলো প্রিভেন্টর। ইনহেল কটিকো স্টেরয়েড। এ ছাড়া ছোট্ট একটি মেশিন দিয়ে রোগী নিজেই নির্ণয় করতে পারবে সে অ্যাজমার কোন অবস্থায় আছে। গ্রিন (সবুজ) জোন, ইয়োলো (হলুদ) জোন ও রেড (লাল) জোন। সবুজ জোন মানে হলো রোগী যে ওষুধ পাচ্ছে সেটিই তার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু যেই হলুদ জোনে আসল তখন তার সতর্ক হতে হবে। আমরা এমনভাবে তাদের শিখিয়ে দেই যাতে সে যেকোনো সময় বুঝতে পারে কোন ওষুধটা বাড়াবে বা কমাবে। ফলোআপে তো মাসে মাসে আসতে হবে।
এরপর হলো লাল জোন। এই জোনে গেলে আর বাসায় থাকা যাবে না। কারণ এটি তো একিউট অ্যাটাক। দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে। কারণ সেখানে অক্সিজেন লাগবে। স্টেরয়েড ইনজেকশন লাগবে, ন্যাবুলাইজেশন লাগবে।
প্রশ্ন : অ্যাজমা অ্যাটাক যেকোনো মুহূর্তে হতে পারে। তখন আসলে তাৎক্ষণিকভাবে রোগী ও তার আশপাশের মানুষের কী করণীয়?
উত্তর : অনেকে ভাবে অ্যাজমা ছোঁয়াচে রোগ। এটি কিন্তু ছোঁয়াচে রোগ নয়। এটি বংশগত হতে পারে। তবে ছোঁয়াচে রোগ নয়। অনেকে অ্যাজমা হলে বলতে চান না। এটি হলো কুসংস্কার বা ভুল ধারণা।
প্রেডনিসোলোন নামে একটি ট্যাবলেট রয়েছে পাঁচ থেকে ২০ মিলিগ্রাম, যখন রোগী বুঝতে পারছে তার একিউট অ্যাটাক হচ্ছে, সে টের পাবে। সে বুঝবে আমার অবস্থা এখনই খারাপ হয়ে যেতে পারে। তখন যদি পাঁচ থেকে ২০ মিলিগ্রাম প্রেডনিসোলোন ট্যাবলেট খেয়ে নেয়, তখন তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার পাবে।
প্রশ্ন : অ্যাজমার রোগী যারা আছে তারা কি সবসময় এই ওষুধটা সাথে রাখবে?
উত্তর : প্রেডনিসোলোন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ তো এগুলো সবসময় খেতে নেই। এগুলো সাধারণ ওষুধ নয় আবার সাধারণও। যিনি জানে লাল জোনে আছেন, তিনিই সাথে রাখবেন এই ওষুধ।