নাকের পলিপ কেন হয়?
নাকের পলিপ একটি জটিল সমস্যা। সর্দি, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি সমস্যা হয় পলিপ হলে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৩৮৬তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন অধ্যাপক মো. আবদুল্লাহ। বর্তমানে তিনি পপুলার মেডিকেল কলেজ ও বাংলাদেশ ইএনটি হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন।
urgentPhoto
প্রশ্ন : অ্যালার্জি ও নাকের পলিপের বিষয়ে আমাদের কিছু বলুন?
উত্তর : অ্যালার্জি শরীরের বিভিন্ন অংশে নানাভাবে উপস্থাপিত হয়। আমাদের ইএনটি সম্পর্কিত চিকিৎসকদের নাকের অ্যালার্জির চিকিৎসা করতে হয়। নাকের অ্যালার্জি হলে আমরা দেখি রোগীদের প্রচণ্ড হাঁচি হয়। সঙ্গে নাক থেকে পানি পড়ার সমস্যা হয়। অ্যালার্জি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। অ্যালার্জি পরিবেশের মধ্যে আছে, অ্যালার্জি আছে এমন জায়গায় যাওয়ার কারণে হতে পারে। নাকে যেহেতু আমরা শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে বাতাস নিই, বাতাসের মধ্যে এই সব জিনিস থাকে; ময়লা, ধুলাবালি বা বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জেন থাকে। ফুলের রেণুর কারণে হতে পারে। অনেক সময় পশু-পাখির কারণে অ্যালার্জির সমস্যা হয়।
নাকে আমাদের যে মাংসপেশিগুলো আছে, এগুলোর স্পর্শকাতরতার কারণে প্রতিক্রিয়া করে। এই যে আমাদের প্রচণ্ড হাঁচি হয়, এটি সুরক্ষিত পদ্ধতি হিসেবে কাজ করে। হাঁচি কিন্তু আমাদের শরীরের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য কাজ করে। এই জিনিসগুলো যদি আমাদের ভেতরে যায়, তাহলে কিন্তু ফুসফুসে সমস্যা তৈরি করে। ফুসফুসে গেলে যে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হয়, একেই আমরা অ্যাজমা হিসেবে বলি। সুতরাং নাক থেকে এটি বের হয়ে যায় এই হাঁচির মাধ্যমে। হাঁচি এগুলোকে বের করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এর পর নাকের পানির মাধ্যমে অ্যালার্জেনগুলো বের হয়ে যায়।
প্রশ্ন : নাকের পলিপ সম্বন্ধে একটু জানতে চাই?
উত্তর : নাকের যে মাংসপেশিগুলো, এটা অনেক সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া করতে করতে, অনেক দিন ধরে যদি বিনা চিকিৎসায় থাকা হয়, তাহলে কিন্তু এগুলোতে পানির মতো করে ফুলে শেষ পর্যন্ত পলিপের মতো তৈরি হয়।
প্রশ্ন : নাকের পলিপ হওয়ার লক্ষণগুলো কীভাবে প্রকাশ পাবে?
উত্তর : হাঁচি, সর্দি, নাক থেকে পানি পড়া—এগুলো তো হবেই, এসব সমস্যায় অনেক দিন ধরে ভুগতে ভুগতে দেখা যাবে নাক বন্ধের সমস্যা হচ্ছে। নাক দিয়ে শ্বাস নিতে অসুবিধা হবে, অনেক সময় নাকে সংক্রমণ হতে পারে। সংক্রমণ হয়ে নাক থেকে সর্দি পড়ে। সর্দি পেকে নাক থেকে পুঁজের মতো তৈরি হওয়া শুরু হয়। এই জিনিসগুলো চলতে চলতে একপর্যায়ে নাক বন্ধ হয়ে যায়।
নাকের পলিপকে আমরা দুই ভাগে ভাগ করি। একটিকে ইটময়রেল পলিপ বলি। আরেকটিকে মেক্সিলারি এনট্রোকনাল পলিপ বলি। ইটময়রেল পলিপ, এগুলোর ক্ষেত্রে নাকের যে ওপরের অংশ, যাকে নাকের সেতু বলা হয়, এখানে অনেক কোষ থাকে। নাকের ঝিল্লিতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া করে ফুলে পলিপ হয়। কোষের দেয়াল পাতলা থাকে, এগুলো ফুলে মাংসপেশি হিসেবে ঝুলে পুরোটাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এনট্রোকনাল পলিপ, যেটা মেক্সিলারি এনট্রোকন, দুই দিকে দুটো সেখানে হয়। তবে সাধারণত একদিকেই হয়, একটিতে হয়। এনট্রোকনাল পলিপ যেটা, সেটা সাধারণত নাকের পেছনের দিকে গিয়ে গলায় গিয়ে বড় হয়ে নাকের আকৃতিটাই বন্ধ করে দেয়। তখন শ্বাস নিতে পারে না। আবার ইটময়রাল পলিপ, যেটি এটাতে দুই দিকে অনেকগুলো হয়ে নাক পুরোটা বন্ধ করে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়।
প্রশ্ন : শুধু কি অ্যালার্জির কারণেই নাকে পলিপ হয়?
উত্তর : ইটময়রাল পলিপগুলোকে বলা হয় অ্যালার্জির কারণ। এনট্রোকোনাল পলিপের ক্ষেত্রে এর সঙ্গে সংক্রমণও কারণ হতে পারে।
প্রশ্ন : সে ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো কি একই রকম থাকে?
উত্তর : প্রাথমিক লক্ষণ, যেগুলো হাঁচি, নাকে সর্দি, যখন সংক্রমণের কারণে হয়, তখন সর্দিগুলো পেকে পুঁজের মতো আসতে পারে।