স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে ৭টি পরামর্শ
স্তন ক্যানসার অত্যন্ত প্রচলিত একটি ক্যানসার। গবেষণায় বলা হয়, গত ২৫ বছরে ভারতীয় নারীদের স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পরিমান অনেক বেড়েছে। এই ক্যানসারের প্রবণতা গ্রামের থেকে শহুরে নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। বংশগত কারণ, জীবনযাপনের ধরন, পরিবেশগত কারণ ইত্যাদি স্তন ক্যানসারের জন্য দায়ী। কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিলে স্তন ক্যানসার থেকে অনেকটাই দূরে থাকা যায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া দিয়েছে এ বিষয়ে ৭ টি পরামর্শ।
১.ঘরের কাজ করুন
গবেষকরা বলেন, কায়িক শ্রম নারীর স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। ব্যায়াম করা দেহের চর্বি কোষকে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই চর্বি কোষ টিউমার হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। যুক্তরাজ্যের ব্রেকথ্রো ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিষ্ঠানের গণস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রধান এলুনড হাগস বলেন, ‘প্রতিদিন একজন নারীর অন্তত ৩০ মিনিট কায়িক শ্রম বা শারিরীক পরিশ্রম করা উচিত। এটি স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি ২০ শতাংশ কমিয়ে দেয়।
২.শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান
যাদের শিশু রয়েছে তারা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান। ওয়ার্ল্ড ক্যানসার রিসার্চ ফান্ড বলছে, যারা নিয়মিত বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ান না তাদের থেকে যারা বুকের দুধ খাওয়ান তারা স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি থেকে ৫ শতাংশ বেশি মুক্ত থাকেন। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে রক্তে ক্যানসার তৈরিকারী হরমোন প্রতিহত হয়।
৩. অ্যালকোহল পান না করা
নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই যেসব নারী অ্যালকোহল পানে অভ্যস্ত তাদের বদভ্যাসটি বাদ দিতে হবে।
৪.রাতের কাজ
ডেনিস গবেষকরা জানান, যেসব নারীরা ৬ বছর বা তার বেশি সময় ধরে সপ্তাহে তিন দিন রাতের শিফটে কাজ করেন তাদের স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তবে এটি প্রমাণ করতে আরো গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। গবেষকরা বলছেন, কম খাবার গ্রহণ, কায়িক শ্রম না করা এগুলোর মতো রাতের শিফ্টে কাজ করাও একটি অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস। তাই মেয়েদের চিন্তা করা প্রয়োজন তারা আসলে কতটুকু সময় এবং কীভাবে কাজ করবেন।
৫. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে যারা স্টেটিন জাতীয় (এই ওষুধ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে খাওয়া হয়) ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহার করে আসছেন তাদের স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। গবেষণায় বলা হচ্ছে, অল্প সময়ের জন্য স্টেটিনের ব্যবহার দেহে ভালো কাজ করলেও, দীর্ঘদিন এটির ব্যবহার কিছু ক্যামিক্যাল তৈরি করে যা টিউমার হওয়ার অন্যতম কারণ। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই স্টেটিন খাওয়া বা না খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
৬.অস্বাস্থ্যকর ক্যামিকেল এড়িয়ে চলুন
ক্যানজাত খাবার এবং পানীয় এড়িয়ে চলুন। পাশাপাশি প্লাস্টিক কনটেইনারের মাইক্রোওয়েভের খাবার এড়িয়ে চলুন। এগুলোতে যেই ক্যামিকেল রয়েছে সেগুলো ইস্ট্রোজেনের মতো আচরণ করে; স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া উচ্চতাপে করা গ্রিল খাবার, ভাজা মাংস, বার-বি-কিউ দেহে একরিলামাইড উৎপন্ন করে। এটিও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়য়। তাই অল্প আঁচে রান্না করা খাবার খান এবং ক্যান বা কনটেইনারের খাবার এড়িয়ে চলুন।
৭. রোদ মাখান
কানাডিয়ান গবেষকদের মতে, সূর্যের আলো ভিটামিন ডি এর অন্যতম উৎস। যা স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। তবে অতিরিক্ত রোদ ত্বকে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই রোদ পোহাতে ভারসাম্য বজায় রাখুন।