উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা কী
উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা না করা হলে এটি দেহের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি করে। তাই প্রয়োজন এর যথাযথ চিকিৎসা। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৪৯২তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন অধ্যাপক এম তৌহিদুল হক। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের হৃদরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কী কী সুযোগ আছে?
উত্তর : দেখুন, অনেক জিনিস বিবেচনা করতে হয়। শুধু রক্তচাপ আছে কি না? বয়স কত? পাশাপাশি অন্যান্য ঝুঁকি আছে কি না? ডায়াবেটিস আছে কি না? কিডনি খারাপ হচ্ছে কি না? কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি আছে কি না? এগুলো দিয়ে রোগটি কত জটিল হচ্ছে, সেটি বোঝা যায়। আপনি কি ওষুধ থেরাপি দেবেন, না কি ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসা করতে পারবেন? কিছু ওষুধে চিকিৎসা, কিছু আলাদা চিকিৎসা রয়েছে। সুতরাং উচ্চ রক্তচাপ থাকলে আপনাকে ওষুধ খেতে হবে। অনেক সময় আমাদের রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ যেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দেয়। সুতরাং আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সবসময় ওষুধ খেতে হবে। মূল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেগুলো বললাম, সেগুলো ভালো থাকবে। না হলে যেকোনো জটিলতা আসতে পারে। ওষুধ ছেড়ে দেওয়া কখনো সমীচীন নয়। ওষুধ নিয়মিত খেতে হবে। উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ রাখে চিকিৎসা। যদি মনে করেন, একটি মানুষ তরুণ বয়স, ২৫ থেকে ৩০ বছর হয়ে গেছে, উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়েছে, ওষুধ খেয়ে নিয়ন্ত্রণে আছে। ওষুধ ছেড়ে দিল হয়তো যেকোনো সময় উত্তেজিত হয়ে গেল। হঠাৎ করে মস্তিষ্কের রগ ছিঁড়ে যেতে পারে। যেকোনো সময় হেমোরেজ হয়ে প্যারালাইসিস হয়ে যেতে পারে। সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেল। সুতরাং ওষুধ খেয়ে আপনার রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
প্রশ্ন : চিকিৎসা না নিলে কী কী জটিলতা হতে পারে?
উত্তর : চারটি অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয় উচ্চ রক্তচাপের কারণে। যদি আপনি ওষুধ নিয়মিত খান, তাহলে আপনার মস্তিষ্ক সুস্থ থাকবে। মস্তিষ্কের মধ্যে স্ট্রোক হয়, হেমোরেজ হয়, এটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। প্যারালাইসিস হয়ে যায়। কথা অস্পষ্ট হয়ে যায়। কেউ কেউ অন্ধ হয়ে যায়। চোখে রক্তক্ষরণ হয়। কিডনির মধ্যে জটিলতা তৈরি হয়। কিডনি অকার্যকর হয়ে যায়। আস্তে আস্তে খারাপ হতে থাকে। আর হার্টের মধ্যে কী হয়? হার্টের মধ্যে এনজাইনা হয়, শ্বাসকষ্ট হয়, হার্ট অকার্যকর হয়—এগুলো হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সুতরাং ওষুধ খেয়ে ভালো মতো উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখলে রোগী অনেক সুস্থ থাকে। আর চিকিৎসা অনেক ধরনের আছে। অনেকের একটি ওষুধ হচ্ছে না, দুটো তিনটি পর্যন্ত ওষুধ লাগে। একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম। কারণের ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা নির্ণয় করতে হয়।