মাইগ্রেনের প্রাথমিক উপসর্গগুলো কী কী ?
মাথাব্যথার অন্যতম কারণ মাইগ্রেন। মাইগ্রেনের ব্যথা মাঝারি থেকে জটিল ধরনের হয়। প্রচণ্ড ব্যথা হয়। তবে মাইগ্রেন একদিনে হয় না। দীর্ঘ সময় ধরে ধীরে ধীরে ডালপালা মেলতে থাকে। গরম পড়লে মাথাব্যথা, বৃষ্টি নামলে মাথায় যন্ত্রণা, অফিসে জরুরি মিটিং চলছে, তখনও মাথা ঢিপঢিপ শব্দ করার মতো লক্ষণ দেখা দেয় অনেকের। তবে মাইগ্রেন মানেই যে কেবল মাথা ব্যাথার উপসর্গ দেখা দেবে, তা কিন্তু একেবারেই নয়।
বরং প্রাথমিক লক্ষণগুলো একেবারেই অন্যরকম। মাইগ্রেনের সমস্যা যে জন্য মাথাযন্ত্রণাই ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তাই সেই লক্ষণগুলো দেখা দিলে তা এড়িয়ে যান বেশির ভাগই। অথচ সেই লক্ষণগুলোই কিন্তু জানান দেয়, মাইগ্রেনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে কি না।
কারও চা-কফি থেকে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়ে, কারও আবার সিগারেট বা মদ্যপান করলে ব্যথা বেড়ে যায়। আবার ঠান্ডা কোমল পানীয় খেয়ে মাইগ্রেন বেড়েছে, এমনও লক্ষ্য করা গিয়েছে।
মাইগ্রেন হলো ‘নিউরোলজিক্যাল’ রোগ। চিকিৎসকরা বলেন, মাথার একদিকেই ব্যথা হয় বেশি। সারাক্ষণ দপদপ করতে থাকে। সাধারণত ৪৮ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টা অবধি ব্যাথা থাকতে পারে। কেবল মাথায় নয়, ঘাড়ে ও মাথার পিছনের দিকেও যন্ত্রণা হয়। সেই সঙ্গে বমি বমি ভাবও থাকে। বেশিক্ষণ চোখ খুলে রাখা যায় না। চোখে আলো পড়লেও কষ্ট হয়।
মাইগ্রেনের প্রাথমিক উপসর্গগুলো
– ঘন ঘন মেজাজ বদলে যাবে। ‘মুড ডিজ়অর্ডার’-এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গে আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যেমন যখন তখন খিদে পাবে, মাথাযন্ত্রণা শুরু হবে, হঠাৎ করেই খুব ভাল লাগার অনুভূতি হবে আবার মন বিষাদে ভারাক্রান্তও হয়ে উঠতে পারে। প্রচণ্ড উদ্বেগ, দুশ্চিন্তাও হতে পারে।
–‘জার্নাল অফ নিউরোসায়েন্স’ বিজ্ঞানপত্রিকার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোনো রকম অসুখ ছাড়াই শরীর প্রচন্ড দুর্বল হয়ে পড়বে। ক্লান্তিভাব কাটতেই চাইবে না। কোনো কাজে উৎসাহ পাওয়া যাবে না। সারাক্ষণ ঝিমুনি লাগবে।
– হয় খিদে বেড়ে যাবে, না হলে খিদে হবেই না। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, মাইগ্রেনে আক্রান্ত রোগীর প্রাথমিক পর্যায়ে ‘বিঞ্জ ইটিং’-এর প্রবণতা দেখা দিতে পারে। পেট ভর্তি থাকলেও খেতে ইচ্ছে হবে। বিশেষ করে মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আসক্তি বাড়বে।
– শব্দ ও আলোর প্রতি আরও সংবেদনশীল হয়ে উঠবেন রোগী। চোখে আলো পড়লেই কষ্ট হবে, বেশি আলোতে থাকতে ইচ্ছে করবে না। যে কোনও শব্দ শুনলেই অস্বস্তি হবে। কানে কাছে কোনও আওয়াজ হলে বিরক্তি ভাব বাড়বে, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাবে।
– মাইগ্রেনের প্রাথমিক পর্যায়ে আরও একটি উপসর্গ দেখা দিতে পারে, তা হল ঘন ঘন প্রস্রাব করা। অনেকেই হয়তো ভাববেন ডায়াবেটিসের প্রাথমিক উপসর্গ, তা কিন্তু নয়। অন্যান্য উপসর্গগুলোর সঙ্গে ঘন ঘন মূত্রত্যাগও কিন্তু মাইগ্রেনের একটি উপসর্গ হতে পারে।
– গলায় ও ঘাড়ে ব্যাথা হবে। মাথার পিছন দিকে বা ঘাড়ে অস্বস্তি হতে থাকবে। গা গোলানো, মাথাঘোরার মতো লক্ষণ দেখা দেবে।