শীতে ঠান্ডা দূর করুন সহজ পদ্ধতি
শীতকাল মানেই যেমন পিঠা-পুলি আর উৎসবের আমেজ, তেমনই এই সময়টায় বাড়ে সর্দি-কাশি আর ফ্লু-এর প্রকোপ। একটু অসতর্ক হলেই ঠান্ডা জেঁকে বসে। জীবনযাত্রাবিষয়ক ম্যাগাজিন 'রিডার্স ডাইজেস্ট' সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সাময়িকীতে বিশেষজ্ঞরা কিছু সহজ পদ্ধতির কথা বলেছেন, যা প্রতিদিনের অভ্যাসে যোগ করলে ঠান্ডা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।
এখানে রইলো শীতে ঠান্ডা দূর করার কার্যকর ৫টি পদ্ধতি
১. টিস্যু ও রুমালের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করুন
শুনে হাসি পেলেও এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অভ্যাস। হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে বাতাসের মধ্যে দ্রুত জীবাণু ছড়ায়। আপনার বাড়ি বা অফিসের লোকজনের বসার জায়গাগুলোর আশেপাশে টিস্যু বক্স রাখুন। হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় মুখ ও নাক টিস্যু বা রুমাল দিয়ে ঢাকলে জীবাণু চারপাশে ছড়ানোর সুযোগ কম পায়। ব্যবহৃত টিস্যু দ্রুত নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দিন এবং হাত পরিষ্কার করে নিন।
২.ঘরের জানালা খুলে সতেজ বাতাস আনুন
অনেকেই মনে করেন, শীতে ঘরের জানালা বন্ধ রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু দিনের বেলা কিছুক্ষণের জন্য হলেও ঘরের একটি বা দুটি জানালা খুলে দিন। এতে ঘরের ভেতরের বদ্ধ বাতাস বেরিয়ে গিয়ে সতেজ বাতাস ঢুকতে পারবে। বায়ু চলাচল ভালো হলে ঘরের অভ্যন্তরে জীবাণুর পরিমাণ কমবে, যা ঠান্ডা বা ফ্লু-এর সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে।
৩.ঘন ঘন চোখ চুলকানো বা স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন
আঙুল দিয়ে চোখ চুলকানো বা ঘষার ক্ষেত্রে সর্বাধিক সতর্ক থাকুন। গবেষণায় দেখা গেছে, বেশিরভাগ লোকই দিনে ২০ থেকে ২৫ বার আঙুল দিয়ে চোখ ঘষেন। চোখ হলো শরীরের অভ্যন্তরে জীবাণু প্রবেশের অন্যতম সহজ পথ। তাই ঠান্ডা বা অন্যান্য সংক্রমণ প্রতিরোধে বাইরে থেকে এসেই হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিন এবং অপরিষ্কার হাত দিয়ে চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন।
৪.নিয়মিত তোয়ালে পরিবর্তন ও পরিষ্কার রাখুন
হাত মোছার তোয়ালেতে দ্রুত জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে। সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিনদিন হাত মোছার তোয়ালে পরিবর্তন করুন বা পরিষ্কার করে ব্যবহার করুন। তোয়ালের জীবাণু মেরে ফেলার জন্য হালকা গরম পানি দিয়ে ধোয়া সবথেকে ভালো। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সংক্রমণ অনেকটাই দূরে রাখা যায়।
৫.প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় দই রাখুন
ঠান্ডা বা ফ্লু প্রতিরোধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা প্রতিদিন এককাপ দই খান, তারা দই না খাওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় ২৫ ভাগ কম ঠান্ডায় আক্রান্ত হন। দইয়ে থাকা উপকারী প্রোবায়োটিকস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে যদি আপনার অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকে, তবে দই খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ: এই সহজ অভ্যাসগুলো মেনে চলার পাশাপাশি শীতকালে নিজেকে উষ্ণ রাখুন, প্রচুর পরিমাণে গরম পানীয় (যেমন: আদা চা, স্যুপ) পান করুন, এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। সুস্থ জীবনধারা ঠান্ডা থেকে সুরক্ষিত থাকার মূল চাবিকাঠি।

                  
                                                  ফিচার ডেস্ক