কণ্ঠনালির ক্যানসার : অপারেশনের পর রোগী কথা বলতে পারে?
অনেকে কণ্ঠনালির ক্যানসারে ভুগছেন। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে কণ্ঠনালির ক্যানসারে রেডিওথেরাপির ভূমিকা সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে কণ্ঠনালির ক্যানসারে রেডিওথেরাপির ভূমিকা সম্পর্কে বলেছেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হসপিটালে ক্যানসার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. লুবনা মরিয়ম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা. মুনা তাহসিন।
কণ্ঠনালির ক্যানসারের ক্ষেত্রে রেডিওথেরাপির অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। রেডিওথেরাপি ছাড়া আর কোনও চিকিৎসা রয়েছে কি না, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. লুবনা মরিয়ম বলেন, কণ্ঠনালির ক্যানসারে রেডিওথেরাপি যখন যাচ্ছে, তার পাশাপাশি কেমোথেরাপিরও একটি বড় রোল আছে। এ কেমোথেরাপি আমরা কেন দিই, রেডিওথেরাপির কার্যক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তোলার জন্য এই কেমোথেরাপি দেওয়া হচ্ছে। রেডিওথেরাপির ব্যাপারে একটু বলি, অনেকের এ বিষয়ে একটা ভয় কাজ করে। মনে করে, এটা পুড়ে যায়, এটা গরম হয়ে যায়, এটা হিট হয়ে যায়... অনেক ধরনের মিথ আছে এবং সোশ্যাল ট্যাবুও আছে। রেডিওথেরাপি দিতে মানুষ ভয় পায়, মনে করে মেশিনের মাধ্যমে ব্যথা পাবে। রেডিওথেরাপি কিন্তু খুব সহজ একটি চিকিৎসা। একটাই অসুবিধা, যেটা আমি মনে করি, রোগীকে প্রতিদিন এসে এসে থেরাপিটা দিতে হয়। এটা এমন না যে একটা অপারেশন হলো, চার-পাঁচ দিন থাকল হাসপাতালে, তারপর চলে গেল, ভালো হয়ে গেল; এ রকম না। রেডিওথেরাপি হচ্ছে প্রতিদিন, এটা আউটডোর বেসিসে ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়।
ডা. লুবনা মরিয়ম যুক্ত করেন, রোগীকে হাসপাতালে থাকতে হয় না, বাসা থেকে হাসপাতালে এসে রেডিওথেরাপি নিতে হয়। এবং খুব অল্প সময়, হয়তো ১০ মিনিটের মধ্যে চিকিৎসাটা হয়ে যায়। রেডিওথেরাপির কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আমাদের পাশাপাশি আছে কেমোথেরাপি।
ডা. লুবনা মরিয়ম আরও বলেন, কেমোথেরাপি এক ধরনের মেডিসিন, যেটা স্যালাইনের মাধ্যমে আমাদের শরীরে পুশ করতে হয়। কেমোথেরাপি দুইটা কাজ করে থাকে। এক, ক্যানসার সেল যদি ব্লাডের মাধ্যমে কোথাও লুকিয়ে থাকে, সেটাকে মেরে ফেলবে। পাশাপাশি রেডিওথেরাপির কার্যক্ষমতাটা ওরা বাড়িয়ে দিচ্ছে। তবে যখন ক্যানসারটা থাইরয়েডকে ইনভলভ করে ফেলছে, অনেক বেশি অ্যাডভান্স হয়ে যাচ্ছে, তখন কিন্তু রেডিওথেরাপি খুব বেশি ইফেকটিভ না। তখন আমাদের সার্জারিতে যেতে হয়। সেই সার্জারিটা একটু এক্সটেনসিভ সার্জারি। ল্যারেঞ্জ, গলার স্বর, আশপাশের অনেকগুলো অরগান, অঙ্গ কেটে ফেলতে হয়।
অনেকের প্রশ্ন থাকে, যেহেতু কণ্ঠনালি দিয়ে আমরা কথা বলে থাকি, অপারেশনের পর রোগী আর কথা বলতে পারেন কি না, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. লুবনা মরিয়ম বলেন, হ্যাঁ, এটা তো অবশ্যই একটি বড় সার্জারি এবং এটি একটি বড় জিজ্ঞাসা। কারণ, যন্ত্রটাই তো আমরা ফেলে দিচ্ছি। তাহলে আমরা কীভাবে কথা বলব। কথা বলাটা ডিফিকাল্ট হয়ে যায় অবশ্যই। তবে এখন যেটা হয়েছে, কিছু কিছু ডিভাইস বের হয়েছে, যেটাকে আমরা আর্টিফিশিয়াল ভোকাল কর্ড বলি, সার্জারি করার পরে রোগী যখন রিকভারি করে, তখন ওই মেশিনটা গলার স্বরের ওখানে বসিয়ে দেওয়া হয়। তখন আর্টিফিশিয়ালি, যন্ত্রের মাধ্যমে কিছু রোগী কথা বলতে পারে।
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।